Print Date & Time : 24 April 2025 Thursday 3:17 pm

মেঘনায় ভরা মৌসুমেও ইলিশের দেখা নেই

মৎস্য সম্পদের অভয়য়ারণ্য হিসেবে খ্যাত মনপুরার মেঘনায় ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে ধরা পড়ছেনা রুপালি ইলিশ। মৌসুমের শুরুতে জেলেদের জালে ইলিশ পড়ার কথা থাকলেও মৌসুমের মাঝামাঝি সময় এসেও ইলিশের দেখা মিলছেনা।
মাছ না পড়ায় জেলেদের সংসারে অভাব অনটনের বোঝা ক্রমেই বাড়ছে। ফলে জেলে পরিবারগুলোতে চলছে দুর্দিন। ভরা মৌসুমেও জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে আড়তদার কারও মুখে হাসি নেই।

মনপুরায় ২০ সহস্্রাধিক জেলে বসবাস হলেও মৎস্য অফিস সূত্র অনুযায়ী ১৪২৪৫ জন জেলে নিবন্ধিত। জেলেদের বয়স কম হওয়ায় ও জেলে কার্ড করার সময় দেশে না থাকায় প্রকৃত জেলেদের কার্ড করা সম্ভব হয়নি। লক্ষাধিক লোকের আবাসভূমিতে শতকরা প্রায় ৭০জন লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য সম্পদের উপর নির্ভরশীল। প্রতিবছর একটা নিদিষ্ট সময়ে এখানকার সকল স্তরের মানুষ মেঘনায় ইলিশের দিকে চেয়ে থাকে। মেঘনার ইলিশকে ঘিরে মনপুরার মানুষের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরছে। মেঘনায় ইলিশ আছে তো মানুষের মুখে হাসি আছে। মেঘনায় মাছ ধরা পড়লে জেলেরা ভালো থাকেন। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমানে মানুষ ভালো নেই।

এবার মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা মেলেনি। লাখ লাখ টাকার দাদন ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঝন নিয়ে জেলেরা ইলিশ মাছের আশায় থাকেন। কিন্তু মেঘনায় মাছ না পড়ায় জেলেরা তাদের সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। ফলে জেলে পরিবারগুলো কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। এখন প্রতিদিন ৩/৪টা বড় ইলিশের দেখা মিলছে। যা বিক্রি করে তেলের খরচ হয়না।

হাজির হাট ইউনিয়নের দাসের হাট মৎস্য ঘাটের হারুন মাঝি,সোনারচর গ্রামের মোছলেহউদ্দিন মাঝি, নিজাম মাঝি,জসিম মাঝি বলেন, আড়তদারদের কাছ থেকে দাদন ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঝন-নিয়ে নদীতে ইলিশের আশায় ট্রলার নামিয়েছি। এখন মেঘনায় ইলিশ নেই। প্রতিদিন ২/৪টা বড় ইলিশ পাচ্ছি। মাছ বিক্রি করে তেলের খরচও ওঠেনা। আমরা খুব সমস্যায় আছি। পরিবার পরিজন নিয়ে দুঃখ কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। ৭/৮ জনের সংসার চালানো কষ্টকর হচ্ছে জেলে পরিবারগুলোর। জেলেরা আশা করছেন সামনের জোতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে। আর সেদিনের জন্য অপেক্ষা করছেন জেলেরা।

আড়তদার নিজামউদ্দিন হাওলাদার, গিয়াসউদ্দিন আজম, বাবুল মাতাব্বর, শাহেআলম বেপারী, ফরহাদ হাওলাদার বলেন, নদীতে মাছ না পড়ায় আমরাও খুব কষ্টে আছি। জেলেদের বিল চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। মাছ না পড়ায় জেলে আড়তদার কারও মুখে হাসি নেই।
উত্তর সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আল্লাহ তায়ালা যদি মেঘনায় মাছের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে জেলেরা হাসি খুশিতে দিন কাটাতে পারে। পাশাপাশি আমরাও মেঘনায় যে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছি তা মোটামুটি লাভ সহকারে ফিরে পাওয়ার সম্ভবনা থাকে। গত বছর এই সময় প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছর এখনও ইলিশের তেমন একটা দেখা নেই।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/