ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে ভারী বর্ষণে মেহেরপুরের কৃষকের স্বপ্ন পানির নিচে তলিয়ে গেছে।গতকাল মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরের পর মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার প্রায় সকল এলাকায় হঠাৎ ভারী বর্ষণ শুরু হলে আধাপাকা ও পাকা জমির ধান তলিয়ে যায়।
এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন থেকে ২ দিন বৃষ্টির পর প্রচন্ড গরম অনুভূত হলেও বিরতি দিয়ে গত সোমবার থেকে আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা যায়। একইসাথে অধিকাংশ এলাকায় থেমে থেমে টিপটাপ বৃষ্টি হতে থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকেও পুরো জেলার আকাশ জুড়ে কালো মেঘের ঘনঘটার পর দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। ভারী বর্ষণে মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সদর উপজেলা পরিষদ, স্টেডিয়াম সড়ক, শহীদ শামসুজ্জোহা পার্ক, গাংনী হাইস্কুল ফুটবল মাঠ ও বামুন্দী-নিশীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে হাটু পানি জমে যায়। এছাড়াও সকল নিচু এলাকাসহ খাদ খন্দকে বৃষ্টির পানিতে থৈথৈ করে। ছোট-বড় পুকুরগুলো ও খালবিলে পানি বৃদ্ধি পায়। মাঠের প্রায় সকল জমির কাঁচাপাকা ধান পানিতে ডুবুডুবু অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে বৃষ্টি হলেও ঝড় বা বজ্রপাতের তেমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভারী বর্ষণে জমির ধান ডুবে যাওয়াই কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।সম্প্রতি ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে সকল ধরনের ফসলের ক্ষতি সামলে উঠতে না উঠতেই আবারও ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে ঘন্টাব্যাপী ভারী বর্ষণে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙে তচনচ হয়ে যায়।বৃষ্টির পর মেহেরপুর সদর উপজেলার দিঘির পাড়া, আলমপুর, টেংরামারি, রামনগর, মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, কালিগাংনী, উত্তর শালিকা, সোনাপুর, কাঁঠাল পোতা, মুজিবনগর উপজেলার নূরপুর, মহাজনপুর, আমদহ, গাংনী উপজেলার গাড়াডোব, পুড়াপাড়া, বাঁশ বাড়ীয়া, চিৎলা, রায়পুর, হেমায়েতপুর, সাহারবাটী, জোড়পুকুরিয়া, হিজলবাড়ীয়া, ভাটপাড়া, নওপাড়া, রামকৃষ্ণপুর, রংমহল, খাসমহল, পলাশীপাড়া, সহড়াতলা, ধলার মাঠসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মাঠের পর মাঠ জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে যেতে দেখা যায়। অনেক জমির ধান কর্তন করার পর সেগুলো পানিতে ভেসে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও ধান কর্তনের পর পালা দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলেও সেগুলোর নিচে প্রায় ১ ফুট পানিতে ডুবে ছিল।ধানের অধিকাংশই পেকে যাওয়ায় সকলে ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, অনেকেই কেটে ফেলেছেন ঠিক এমন সময় হঠাৎ অশনি’র প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকার কৃষকরা।এদিকে ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে আরও কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এ ভয়ে অনেককে জমি থেকে বৃষ্টিতে ভিজেই তা সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। অনেকে পালা দেওয়া মাঠের মধ্যে ধানের পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছেন কি করা যায়।ভারী বর্ষণে তলিয়ে যাবার ভয়ে অনেকেই যাদের জমির পাকা ধান সামান্য ডুবেছে তারা তা পুরোটা ডুবে যাওয়ার থেকে বাঁচাতে কর্তন করে জমি থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছেন। তবে বোঝা যাবে আরও কয়েকদিন পর ঘূর্ণিঝড় অশনি কতটা অশনি সংকেত নিয়ে এসেছে।
রিমন//দৈনিক দেশতথ্য//১১ মে-২০২২