লিচু মেহেরপুরে এখন লাভজনক একটি ফলের নাম। লিচু গাছ লাগিয়ে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। মেহেরপুর জেলার প্রতিটা গ্রামেই লিচুর বাগান না থাকলেও প্রায় বাড়িতে রয়েছে লিচুর গাছ। তবে বেশ কিছু এলাকায় রয়েছে অসংখ্য লিচু বাগান।
জৈষ্ঠ্য মাসের রসে ভরা সুমিষ্ট একটি ফল হলেও একটু আগাম বাজারে এসেছে আঁঠি লিচু। লিচু রসালো ফল হওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধসহ সকল ধরনের মানুষের কাছে পছন্দের একটি ফল। মেহেরপুরে আঁঠি লিচু, মাদ্রাজী লিচু, বোম্বাই লিচু, চায়না-3, চায়না-4, কাঁঠালী সহ আরও কয়েকটি জাতের লিচু থাকলে গত সপ্তাহ ধরে শুধু দেশী আঁঠি লিচুই বাজারে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য জাতের লিচু বাজারে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে।
আঁঠি লিচু বর্তমানে মেহেরপুর জেলা শহর ছাড়াও কেদারগন্জ, মহাজনপুর, আমদহ, বারাদী, আমঝুপি, পিরোজপুর, কাঁঠাল পোতা, বাজিতপুর, সুবিদপুর, মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, গাংনী, বামুন্দী, ভাটপাড়া, তেঁতুল বাড়ীয়া, কাথুলী, সাহারবাটী, বেতবাড়ীয়া, মহাম্মদপুর, করমদী, বাঁশবাড়ীয়া, বাওটসহ ছোট-বড় সকল হাটবাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
জেলার ডিসি ইকো পার্ক এলাকার ভাটপাড়া বাজারে প্রতি পৌণ (৮০টি) আঁঠি লিচু বিক্রি হতে দেখা গেছে ৭০-১০০ টাকায়। তবে কোন কোন বাজারে এর থেকে কম ও বেশি দামেও বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কালীগাংনী-ভিটাপাড়ার উজ্জল হোসেন জানালেন, এবছরে লিচুর মূল্য কম রয়েছে। এই সময়ে গতবছর প্রতি পৌণ লিচু বিক্রি হয়েছে ১৩০-১৫০ টাকায়। তিনি জানান, গাংনী উপজেলার করমদী থেকে বাগানে ১৭ টি লিচু গাছের লিচু ক্রয় করেছেন ৩৪ হাজার টাকায়। লাভবান হবেন বলে তিনি আশাবাদী।
তিনি আরও জানান, লিচুতে লাভবান হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় নতুন নতুন লিচু বাগান তৈরি হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকেও লিচুর চারা বিতরণসহ নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসরিন পারভীন জানান, উপজেলায় ৩’শ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান, উপজেলায় ৭৫ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। মুজিবনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান খান জানান, উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে।
তবে মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জেলায় মোট ৬৩০ হেক্টর জমিতে লিচু বাগান রয়েছে। এটা শুধু বাগানের হিসাব। এছাড়াও বাড়ির আঙ্গিনায় বা রাস্তা জুড়ে অসংখ্য লিচু গাছ রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, ফলন ভালো হওয়ায় দিন দিন লিচু চাষ বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন পাবেন বলে আশাবাদী।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ১১,২০২২//

Discussion about this post