ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: ময়মনসিংহ শহরে রাস্তার ওপর নির্মাণসামগ্রী রেখে উন্নয়নকাজ করায় শহরে যাজনট ও পথচারীদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে মানুষের মূল্যবান সময়।
সিটি করপোরেশন এসব উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করছে না। নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করলে ভোগান্তি কমবে বলে জানান স্থানীয়রা। সিটি করপোরেশন থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি তাদের জানা নেই। শিগগিরই খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডের ২০০টির মতো স্থানে উন্নয়নকাজ চলমান রয়েছে। উন্নয়নকাজের মধ্যে রয়েছে ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কার, রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার ছাড়াও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ।
দেশের বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব কাজ বাস্তবায়ন করছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে কাজ করতে বলা হলেও তা না মানায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর কালীবাড়ি রোড, নতুন বাজার, সি কে ঘোষ রোড, নাটক ঘর লেন, দুর্গাবাড়ি বাইলেনে ড্রেন সংস্কারকাজ চলছে। এসব রোডের মাঝখানে নির্মাণসামগ্রী রাখায় শহরে যানজটের তীব্রতা বেড়েছে। সি কে ঘোষ রোডে মিন্টু কলেজ-সংলগ্ন এলাকায় ড্রেন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আগে থেকেই মাঝরাস্তায় পাথর ফেলে রাখায় প্রতিদিন তীব্র যানজট হচ্ছে।
মিন্টু কলেজ-সংলগ্ন রেললাইনের পাশের চা-বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘নাটক ঘর লেন মোড় থেকে মিন্টু কলেজের সামনে পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। কয়েক দিন ধরে আমরা দেখছি, ড্রেন খুঁড়ে সীমানা নির্ধারণ করা হচ্ছে। কিন্তু এখন পাথর আর বালু কোনো কাজে লাগছে না। তারপরও পাঁচ দিন ধরে রাস্তার মাঝে ঠিকাদার বালু ফেলে রেখেছে। এমনিতেই ট্রেন যাওয়া-আসার সময় ১০-১৫ মিনিট সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় যানজটের কারণে।
ব্যবসায়ী শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘মিন্টু কলেজ লেভেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন ৪৮ বার ট্রেন আসা-যাওয়া করে। ট্রেন আসার পাঁচ মিনিট আগে গেট ব্যারিয়ার ফেলা হয়। এ সময় রাস্তার দুইপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ট্রেন যাওয়ার পর ১০-১৫ মিনিট স্থায়ী হয় যানজট। রাস্তার মধ্যে পাথর ফেলার কারণে এখন কমপক্ষে আধঘণ্টা যানজটে বসে থাকতে হয়। ’
অটোরিকশাচালক মানিক মিয়া বলেন, ‘কমপক্ষে এক মাস ধরে নতুন বাজার রাস্তার কাজ হচ্ছে। ধীরগতির কারণে মানুষের ভোগান্তি কোনোভাবেই কমছে না।’
সাধারণ যাত্রী আরিফা জাহান বলেন, ‘সব সময় দেখি একটা উন্নয়নকাজ শুরু হয় সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে। কিন্তু এখানে দেখছি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়ম মানছে না। সিটি করপোরেশনের চলমান উন্নয়নকাজে আমরা সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। ইচ্ছা করলেই কর্তৃপক্ষ ভোগান্তি কমিয়ে কাজ করতে পারে।’
ঠিকাদার সোমনাথ সাহা বলেন, ‘নগরীর মিন্টু কলেজ-সংলগ্ন এলাকায় ড্রেন নির্মাণকাজ হচ্ছে। উন্নয়নকাজ হলে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ত্যাগ শিকার করতে হবেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি পাথর ও বালু আরেকটু সাইডে নিয়ে রাখা যায় কি না।
১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ভোগান্তি লাঘবে ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাথর সরিয়ে রাস্তা সচল করার জন্য বলা হয়েছে। তারা যদি কোনো কারণে পাথর না সরিয়ে থাকে, তাহলে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//