মাংস রান্নায় খুলনা বিভাগে চুঁইঝালের কদর দীর্ঘদিনের। যেন চুঁইঝাল ছাড়া মাংশের স্বাদ আসে না।অনেকে ঝালের বদলে মাছেও চুঁইঝাল ব্যবহার করে থাকেন। তবে তুলনামূলকভাবে চুইঝালের দাম বেশি। যেকারণে সীমিত আয়ের মানুষ জনপ্রিয় এই মসলাটি ভোগ করতে পারেন না। খুলনাঞ্চলে চুঁই ঝালের আবাদ বেশী হয়।
এই চুই ঝাল দেশের চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় বিদেশেও। দেশের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় যশোরে বেকার অনেকে যুবক চুঁই চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ইতিমধ্যে হাজার পরিবার স্বাবলম্বীও হয়েছেন।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে , চুঁইঝাল পরগাছা ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। গরু ও খাসির মাংস রান্নায় এটি বেশি ব্যবহার হয়। বড় অনুষ্ঠানে মাছ রান্নাতেও চুঁইঝালের ব্যবহার হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে চুই জাল চাষে পৃষ্ঠপোষকতা নেই।
মনিরামপুরের খানপুর, মশিহাটি ও মুন্সি খানপুরসহ ৫ গ্রামে করোনাকালীন সময়ে চুঁইঝালের আবাদ শুরু হয়। এই প্রজেক্টের সঙ্গে জড়িত পাঁচটি গ্রামের সহস্রাধিক বেকার যুবক-যুবতী।
বাণিজ্যিকভাবে চুঁইঝালের চাষের উদ্যোগ নেন মুন্সি খানপুর গ্রামের কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান সবুজ (৩০)। পরে মুন্সি খানপুর, শ্যামকুড়, তেঘরি, ধলিগাতিসহ প্রায় পাঁচটি গ্রামের সহস্রাধিক বেকার যুবক-যুবতী ‘খানপুর চুইঝাল প্রজেক্টে ঝুঁকে পড়েন।
উদ্যোক্তা মাসুদুর রহমান সবুজ জানান, তার বাবা হাজী আনসার মোড়ল চুঁইঝালের ব্যবসা করতেন। তাতে সংসারে স্বচ্ছলতা ছিল। বাবার দেখানো পথে তিনি চুইঝাল চাষ করার পরিকল্পনা করেন। মুন্সি খানপুরসহ আশেপাশের ৫টি গ্রামের ৪শ বিঘা জমিতে সহস্রাধিক যুবক ও যুবতী চুঁইঝাল চাষ শুরু করেছেন। গড়ে উঠেছে ‘খানপুর চুঁইঝালের প্রজেক্ট’। বর্তমানে এ প্রজেক্টে চুইঝাল গাছের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ অফিসার সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, মসলা হিসেবে সুপরিচিত চুঁইঝালের অনেক আগে থেকেই যশোরের মনিরামপুর ও কেশবপুর অঞ্চলে চাষ হয়ে আসছে। তবে সরকারি ভাবে এ চাষে পৃষ্ঠপোষকতা নেই। এ চাষে সরকার যাতে পৃষ্ঠপোষকতা করে তার জন্য আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
খালিদ সাইফুল // দৈনিক দেশতথ্য // ২ ডিসেম্বর ২০২৩