শীতের সোনাঝরা রোদে মাঠজুড়ে যেন ঝিকিমিকি করছে হলুদ ফুলের সমারোহ। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্য্য।দেখে মনে হয় হলুদ বরণে সেজেছে যেন যশোরের প্রকৃতি।সরিষা ক্ষেতের ওপর ভেসে থাকা কুয়াশা সকালবেলার প্রকৃতিকে মনোমুগ্ধকর করে তোলে।প্রাকৃতিক এ সৌন্দর্য অবলোকনে ভারাক্রান্ত মনটিও আনন্দে ভরে উঠবে।হিমেল বাতাসে সরিষা ক্ষেত ছুঁয়ে মন মাতানো গন্ধ পৌঁছে দিচ্ছে লোকালয়ে।সেই গন্ধ যেমন সবাইকে আকৃষ্ট করছে, তেমনই বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে যশোর জেলায় ১৬ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। বিগত দুই বছরের ব্যবধানে এ অঞ্চলে সরিষা আবাদ বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।বাঘারপাড়া উপজেলার হাবুল্যা গ্রামের মাঠে কথা হয় সরিষা চাষি এয়াকুব আলীর সাথে।তিনি বলেন, আমন ধান কেটে ওই জমিতে আবার সরিষা চাষ করেছি।আবহাওয়া অনুকূলে হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে।এ জেলায় বারি সরিষা-১৪,১৫, সোনালী সরিষা-৭৫ ও উফশী টরি-৭ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে।সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলার অংশ মিলে জলেশ্বর বিলের অবস্থান।বিলটিতে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ সরিষার আবাদ হয়েছে।বাঘারপাড়া উপজেলার হাবুল্যা গ্রামের কৃষক এখলাজ হোসেন জানান, তিনি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন।ফলনও ভালো হয়েছে।কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।একই এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন,সরিষা আবাদে খরচ কম ও লাভ বেশি।একমণ সরিষার দাম ২ হাজার টাকা।সরিষার মান সম্মত তেলের চাহিদাও বাড়ছে।তাছাড়া অব্যাহত ধান আবাদে জমির উর্বরতা কমে যায়।সরিষা আবাদে জমিতে সরিষার পাতা পড়ে তা পচার পর জমির উর্বরতা বাড়ে।এসব কারণে কৃষকরা সরিষার চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) দীপঙ্কর দাস বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জমির উর্বরতা ধরে রাখার জন্য শস্য নিবিড়তার জন্য কৃষককে সরিষা আবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে।কারণ সরিষা আবাদ করে একই জমিতে সহজেই তিন ফসলের চাষ করা সম্ভব।এজন্য অধিকাংশ কৃষককে সরিষা আবাদের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//