আবেদ হোসাইন, নিজস্ব প্রতিনিধি যশোর: এটা কি মহাসড়ক নাকি গ্ৰামের কাদাময় রাস্তা তা বোঝার উপায় নেই।যশোর-খুলনা মহাসড়কের বসুন্দিয়া থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ এখন যান চলাচল তো দূরের কথা খালি গায়ে চলাচলের অযোগ্য।
জায়গায় জায়গায় গর্ত, উঠে যাওয়া পিচ আর হাঁটুসমান কাদা—সব মিলিয়ে এটি পরিণত হয়েছে এক ভয়ঙ্কর মৃত্যুফাঁদে। প্রতিদিনই ঘটছে যানবাহন বিকল হওয়া, উল্টে পড়া কিংবা দুর্ঘটনার ঘটনা। দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, এমনকি পণ্যবাহী যানচালকরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের অন্যতম ব্যস্ততম এই মহাসড়কটি বেনাপোল স্থলবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর, নওয়াপাড়া নদীবন্দর ও ভোমরা বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত প্রধান রুট। প্রতিদিন হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, বাস এই পথে যাতায়াত করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় সংস্কার কাজ চললেও সড়কের অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি।
বিগত সরকার ২০১৭ সালে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু করলেও কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালে তা শেষ করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের কয়েক মাসের মধ্যেই আবার সড়ক ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে চলছে লাগাতার সংস্কার, কিন্তু ফলাফল হতাশাজনক।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়েছে, নতুন করে আরও ১৭২ কোটি টাকার কাজ চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সবুর বলছেন, “প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের হাঁটু কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাসচালক প্রিতম জানালেন, “চেঙ্গুটিয়া থেকে বসুন্দিয়া পর্যন্ত অংশে রাস্তাই নেই বলা চলে। গর্তে পড়ে গাড়ির এক্সেল ভেঙে যাচ্ছে।
এক ট্রাকচালক জানান, “টানা বৃষ্টিতে ট্রাকের স্প্রিং ভেঙে কাদায় আটকে পড়েছিল। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে সরাতে।”
নওয়াপাড়া গ্রুপের ম্যানেজার রাজু আহমেদ বলছেন, “দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০% সার এই বন্দরের মাধ্যমে সরবরাহ হয়। অথচ এই সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ট্রাকগুলো পণ্য লোড করতেই চায় না।
যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জানিয়েছেন, “মাটির গুণমান খারাপ ও অতিরিক্ত ওজনের গাড়ির কারণে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। বুয়েটের পরামর্শে ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। চার কিলোমিটার শেষ হয়েছে, আরও আট কিলোমিটারের কাজ বাকি। সবকিছু শেষ হতে দেড় বছর সময় লাগবে।”