যুক্তরাজ্যে নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী দামে ক্রেতাদের হিমশিম অবস্থা। ৪০ বছরের মধ্যে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্ববাজারে তেলের ঊর্ধ্বমুখী দামই এর কারণ, বলছেন বিশ্লেষকরা।
বাজারগুলোতে দেখা যায়, সারি সারি নিত্যপণ্যের সমাহার। বাজারে সংকট না থাকলেও দিন দিন ঊর্ধ্বমুখী দরে সাধারণ ক্রেতাদের হিমশিম অবস্থা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত মাসে দেশটির মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ নয় শতাংশে পৌঁছেছে। দেশটিতে গত এক বছর খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে অন্তত সাত শতাংশ।
বুধবার (১৮ মে) যুক্তরাজ্যের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস জানায়, বর্তমানের মুদ্রাস্ফীতির হার ১৯৯০-এর দশকের যুক্তরাজ্যের মহামন্দার সময়ের মুদ্রাস্ফীতির হারকেও পেছনে ফেলেছে। অনেকেই এই মুদ্রাস্ফীতির ফলে ৯০-এর দশকের আকাশছোঁয়া সুদের হারের কথাও স্মরণ করছেন। যুক্তরাজ্য বর্তমানে ইউরোপের সর্ববৃহৎ ৫ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি বিরাজ করছে। জি-সেভেন ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যেও যা সর্বোচ্চ।
যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়েই দেশগুলো বর্তমানে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলা করছে। আজকের মুদ্রাস্ফীতির কারণ হলো—গত এপ্রিলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। আমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের জনগণকে বৈশ্বিক এই চ্যালেঞ্জ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হব না হয়তো, তবে আমরা তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রস্তুত এবং মুদ্রাস্ফীতি কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতির ফলে দেশটিতে রেস্তোরাঁ, ক্যাফেসহ বিভিন্ন সেবার খরচ বৃদ্ধি করেছে। বিশেষ করে গত এপ্রিলে দেশটি ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স সিস্টেমে আবারও ফিরে যাওয়ার ফলে খরচ আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা সাধারণ মানুষের।
তারা বলছেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমাদের জীবন ধারণের অভ্যাস বদলাতে হবে। আমাদের বেতনের টাকা থেকে অনেক কিছুর বিল দিতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে এক কাজের পাশাপাশি আরও চাকরি খুঁজতে হবে।’
এদিকে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেচাকেনাও কমে গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘এটাকে আসলে বেঁচে থাকা বলে না। আমরা কাজ করেই যাচ্ছি; কিন্তু আসলে কিছুই হচ্ছে না। সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কোনো কিছুই আর সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে নেই।’
জা// দেশতথ্য//১৯-০৫-২০২২//০৯.৩৪ পি এম