ওয়াশিংটন ডিসি:
স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রাম এবং দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গমাতার অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়। এছাড়া, কানাডার অটোয়া, ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়া, সৌদি আরবের জেদ্দায়, তুরস্কের ইস্তান্বুল এবং ইতালির রোমেও বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
এ উপলক্ষ্যে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে পরিবার, সমাজ ও জাতির প্রতি বঙ্গমাতার মহান আত্মত্যাগকে স্মরণ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান জাতির পিতা এবং বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শুরুতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া, বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের ওপর দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গমাতার অনন্য অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। জাতির পিতার বিশ্বস্ত জীবনসঙ্গী হিসেবে ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অসামান্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে তার জীবনে লালন ও ধারণ করেছেন এবং তার সন্তানদেরও একই আদর্শে গড়ে তুলেছেন।
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে শহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও তাদের পরিবারের সদস্যদের এবং অন্যান্য শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী :
নিউইয়র্ক:
‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা, প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে। অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে দিবসটির তাৎপর্য এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গমাতার প্রেরণা ও বহুমাত্রিক অবদান তুলে ধরে উন্মুক্ত আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন
নিউইয়র্ক:
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহিদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনায় বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। দিবসটির প্রতিপাদ্য-‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় ইতিহাস। এই ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুর পরে এই ইতিহাস সৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। কারণ তিনি ছিলেন জাতির পিতার সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও সকল সঙ্কটে এক অকুতোভয়, বিশ্বস্থ ও নির্ভিক সহযাত্রী। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার জন্য একযুগেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। এসময় বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা দলীয় কর্মী এবং দলের প্রয়োজনে তাঁর সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছেন; প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে দলীয় কর্মকান্ড সচল রেখেছেন এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন সাধারণের মধ্যে অসাধারণ প্রজ্ঞা ও প্রতিভার অধিকারিনী। বঙ্গবন্ধুর কারাগারে থাকাকালীন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সাহসী ভূমিকা পালন এবং বঙ্গবন্ধুর চরম আস্থার প্রতীক হিসেবে তিনি আমার চোখে দেখা নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, উদারতা, মানবিক হৃদয় এবং সাদামাঠা জীবনযাপনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বঙ্গমাতার আদর্শ থেকেই এমন গুণাবলী অর্জন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের নারীরা বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ ও মুল্যবোধে উজ্জীবিত দেশ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত।
উন্মুক্ত আলোচনায় মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। কেক কেটে বঙ্গমাতার জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post