একটা দুটো নয়, শত শত মানুষ মারা গেলেও রক্ত নদী দেখে হৃদয়ে ব্যথা লাগেনা মার্কিনিদের ৷ কারণ ,
রক্তের চেয়ে অস্ত্র ব্যবসার মুনাফা অর্জন করা তাদের মূল উদ্দেশ্য৷ আফগানিস্তান, মিশর,ইরাক, সিরিয়া,
লেবালন, আলজেরিয়া, ইউক্রেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গৃহযুদ্ধের উস্কানিদাতা আমেরিকা৷ মুখে মানবাধিকার বললেও রক্ত দিয়ে গোসল করতে ভালোবাসে যুক্তরাষ্ট্র ৷
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিমালিকানায় পুঁজির অভাবনীয় বিকাশ ঘটেছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ২০টি বহুজাতিক কোম্পানির ১৬টির মালিক মার্কিনরা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কিছুকাল আগে থেকেই অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্রের ব্যবসায় যুক্তরাষ্ট্র সাফল্যের স্বাক্ষর রাখে। অস্ত্র ব্যবসায় পুঁজির বিনিয়োগ অনেক বেশি লাভজনক বলেই পুঁজিপতিরা এই খাতেই বিনিয়োগ করছেন। অস্ত্র ব্যবসার এই সাফল্য মার্কিন আধিপত্যের ভিত্তি মজবুত করেছে।
ফিলিস্তিনি হত্যার রক্তের দাগ পশ্চিমাদের হাতেও সমানভাবে লেগে আছে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এবং তার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র দেশে দেশে যুদ্ধ উসকে দিয়ে মূলধন গঠন করে ব্যাপকভাবে লাভবান হয়েছে।ইউরোপ ও এশিয়া থেকে যুদ্ধাস্ত্রের অর্ডার পেতে শুরু করার পর থেকে ইতিহাসখ্যাত মহামন্দা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে ১৯৪০ সালের জুন থেকে সামরিক খাতের ব্যয়ও বেড়ে যায় বছরে ৬০০ শতাংশ, যা ১৯৪৩-৪৪ সাল নাগাদ জিডিপির ৪২ শতাংশে দাঁড়ায়।
২০২২ সালের ৬ জুনের হিসাব অনুযায়ী, ৮০টি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ৭৫০ সামরিক ঘাঁটি এবং ১৫৯ দেশে মোট ১ লাখ ৭৩ হাজার সেনা মোতায়েন আছে। এতে যে বিপুল পরিমাণ মানববিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহার হয়, তার জোগানদাতা ব্যক্তি খাতে মারণাস্ত্র প্রস্তুতকারী শিল্পমালিকেরা। এই মারণাস্ত্র প্রস্তুতকারী শিল্পমালিকেরাই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রণেতা।
সে জন্য গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় যে হামলা চলেছে, যেভাবে নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে, তা বন্ধের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিপক্ষে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করেছে। জো বাইডেন নিজেই অস্ত্র ব্যবসার সুবিধাভোগী। এমনকি ইচ্ছা করলেও তিনি অস্ত্রশিল্পমালিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেতে পারবেন না। কারণ, পুঁজিপতিরাই সেখানে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
পুঁজিপতিরাই সরকারপ্রধান বা সরকারকে প্ররোচিত করেন যুদ্ধ বাধাতে ও জিইয়ে রাখতে, আগ্রাসন চালাতে ও আগ্রাসন চালাতে সহায়তা করতে। কারণ, তাঁরাই নিজের ও অন্য দেশের সরকারের কাছে এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেন। সেই যুদ্ধ বা আগ্রাসন চালাতে গিয়ে যদি গর্ভবতী নারীকে, এমনকি শিশুকেও হত্যা করতে হয়, তাঁরা পিছ পা হবেন না। কারণ, মুনাফার লোভে তাঁরা উন্মত্ত। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ার গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেল না কিছুই—বসতবাড়ি, হাসপাতাল, নারী—এমনকি দুধের শিশুও।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post