২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সহপাঠি ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ( বয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। বুয়েট চত্ত্বরের নির্মাণ সামগ্রীসহ আকাশে – বাতাসে এখনও যেন তাঁর লাশের গন্ধ ভাসছে। সেই বুয়েটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ভর্তির প্রকাশিত ফলাফলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন নিহতের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ।
তিনি ৪৫০ তম হয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে ভর্তি সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর রোল নং ৫৫৩৯৫।
কিন্তু নানান শঙ্কায় বুয়েটে ভর্তি এখনও অনিশ্চিত ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজের। বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় আজ সোমবার (৪ জুলাই) সকালে তাঁকে ফুলেল সংবর্ধণা জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল। সংবর্ধণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এমনটায় জানিয়েছেন তাঁদের বাবা বরকত উল্লাহ।
বরকত উল্লাহ বলেন, ‘ যেখানে এক ছেলের জীবনের গল্প শেষ হয়েছে নির্মমভাবে। সেখানে আরেক ছেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। যদি আবারো অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। একটু ভয় তো থেকেই যায়। তাই নানান শঙ্কায় ভর্তি হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি। আসন্ন ঈদে স্বজনদের নিয়ে বসাবসি করা হবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে কালচার তা অনুকুল নয়। বাবা হিসেবে চাই যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কথা বলার স্বাধীনতা থাকে।’
নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘ বুয়েট কর্তৃপক্ষ যে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, ব্যাপারটা তেমন নয়। আসলে ভাই হত্যাকারীর স্বজন ও বন্ধরা তো সেখানে থাকতেই পারেন। তাই শঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ভাই হত্যার পর শুধুমাত্র শেরেবাংলা হলের পরিবেশটা ভাল হয়েছে। কিন্তু সেখানে আরো হল রয়েছে। সেগুলোর পরিবেশ তো আগের মতই রয়েছে। এসব নানান কারনে বুয়েটে আমার ভর্তিটা এখনো অনিশ্চিত করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের রাজনীতি আগে বন্ধ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এগুলো বন্ধ হলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুকুল পরিবেশ তৈরি হবে। ‘
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘ নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটে চান্স পাওয়ায় তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। তাঁর ভবিষ্যত মঙ্গল কামনা করছি আমি।’
আবরার ফাইয়াজ কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙা গ্রামের মো. বরকত উল্লাহর ছেলে। তাঁর বাবা একজন বে-সরকারি চাকুরিজীবি। তাঁরর পরিবার কুষ্টিয়া শহর এলাকায় বসবাস করেন।
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৪ জুলাই-২০২২//

Discussion about this post