মুসলিমদের ইতিহাস গৌরবোজ্জ্বল । পরাজয় বলে কিছু নেই ৷ তারা লড়ে সৈন্য সংখ্যার উপরে নয়, ঈমানের তেজে জ্বালিয়ে দেয় জালিমের মসনদ। কিন্তু এখন মুসলিম মানে পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত, নিপড়িত এক জাতি নাম। ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিতে ভয়াবহ হামলার পর নিরবচ্ছিন্ন বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিদিন মরছে ফিলিস্তিনিরা৷ আরব বিশ্বের ভাবনা ৷ রক্তের নদী বয়ে যাক, তাতে আমাদের কি ? আমরাতো খুব ভালো আছি !ক্ষমতাই তো আছি।
পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের সর্বাত্মক সমর্থনে এগিয়ে এলেও মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর মধ্যে ইরান , তুরস্ক ও কাতার ছাড়া আর কোন দেশই উচ্চকণ্ঠে কথা বলছে না। ঘুমের ঔষধ খেয়ে আরব দেশগুলো বিভোর ঘুমে ৷ কিয়ামাতের আগে হয়তো এঘুম ভাঙ্গবে না ৷
বিশ্লেষকরা বলছেন মুসলিম বিশ্বের জনগণ ফিলিস্তিনের পক্ষে একাট্টা হলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কাঠামোর দুর্বলতার কারণে সরকারগুলোর পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়া অসম্ভব।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান না নেয়ার বড় কারণ হলো পশ্চিমাদের অবস্থান।ইসরায়েল একা প্রতিপক্ষ হলে এতদিনে পরিস্থিতি অন্যরকম দেখা যেত।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তার দেশ “ফিলিস্তিনি জনগণের একটি স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার আছে ৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতও বাহরাইন হামাসের হামলার সমালোচনাও করেছে। আর কুয়েত ও ওমানের প্রতিক্রিয়া ছিলো কৌশলী।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর শাসক পরিবারগুলো ক্ষমতার প্রশ্নে কোন ধরনের আপোষ কখনোই করে না। লিবিয়া ও সিরিয়ার ঘটনার পর আরব দেশগুলোর রাজপরিবারগুলো নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার বিষয়টি নিয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন।
আবার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শাসক নির্বাচন করার সুযোগ আছে ইরানে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বলয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল শক্ত অবস্থান নিয়ে আসছে।
অন্যদিকে তুরস্ক বিবৃতিতে শক্ত ভাষা ব্যবহার করলেও নেটোর সদস্যপদসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে কৌশলী ভূমিকা নিতে হচ্ছে। ইরান ছাড়া বেশিরভাগ দেশেরই পাশ্চাত্য নির্ভরতা অনেক বেড়েছে। সে কারণে তাদের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়৷
মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই গণতন্ত্র নেই এবং সে কারণে এসব দেশের সরকারকে সমঝোতা করে চলতে হয়।পশ্চিমাদের চটিয়ে কেউ নিজের ক্ষমতাকে দুর্বল করতে চায় না। মিসর, তিউনিসিয়ার মতো দেশও এর বাইরে নয়। সবাই জানে সোচ্চার হলেই চাপ আসবে। বরং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ইসরায়েলের সাথে তাদের সমঝোতা জরুরি৷
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post