দেশব্যাপী বহুল আলোচিত খুলনার রহিমা বেগমের অপহরণ মামলা সিআইডিতে হস্তান্তরের পর এই প্রথম তার কন্যা মরিয়ম মান্নানের নাটকীয় ঘটনার তদন্তে সংস্থার (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি) কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা মেট্রো ও জেলা সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমীন নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বর পাশা বনিকপাড়া খানাবাড়ী এলাকায় ভিকটিম রহিমা বেগমের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি বাদী, বিবাদী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বাড়ির আশেপাশের লোকজনের সঙ্গে অপহরণের ঘটনার বিষয়ে কথা বলেন। যদিও দেশব্যাপী আলোচিত অপহরণের ঘটনার ভিকটিম রহিমা বেগম সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপারের সামনে কোন কথা বলেননি। এমনকি বিশেষ পুলিশ সুপারের কোন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
পরিদর্শনকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি ‘র পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রবিউল ইসলামসহ সিআইডি’র অন্যান্য সদস্যবৃন্দ বিশেষ পুলিশ সুপারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাতে খুলনার দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা বনিকপাড়া(খানাবাড়ী) এলাকার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম (৫২)। ঐ রাতেই নিখোঁজ রহিমা বেগমের ছেলে রিয়াজ আল সাদী দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের পরের দিন ২৮ আগস্ট রহিমা বেগমের কন্যা আদুরী আক্তার তার মা অপহৃত হয়েছেন মর্মে বাদী হয়ে স্থানীয় দৌলতপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে সন্দেহভাজন হিসেবে প্রতিবেশীদের নাম উল্লেখ করা হয়। ঘটনাটি তখন দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।
এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বোয়ালমারী সৈয়দপুর গ্রামের জনৈক আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ী থেকে সুস্থ ও অক্ষত অস্থায় রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে পিবিআই। রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর ঘটনার আসল রহস্য উন্মোচন করে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করে পিবিআই। প্রতিবেদনে অপহরণ নাটকের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে রহিমা বেগমের কন্যা মরিয়ম মান্নানকে চিহ্নিত করা হয়।
পিবিআই’র দাখিলকৃত প্রতিবেদনে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নান এ নাটক সাজায় বলে উল্লেখ করা হয়। খুলনা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় কথিত ভিকটিম রহিমা বেগম নিজের পক্ষের আদুরী আক্তার ও মরিয়ম আক্তারকে নিয়ে বিক্রিত জমি রক্ষায় নতুন অপকৌশলের অংশ হিসেবে ভিকটিম সেচ্ছায় আত্মগোপনে গিয়ে কথিত অপহরণের নাটক সাঁজায় এবং ঘটনায় জমির ক্রেতারদের সংগে পুর্ব শত্রুতার জেরধরে অপহরণের নাটক সাজানো হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
এরপর তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধ বাদী নারাজী দিলে আদালত থেকে ১৭ জুলাই মামলার তদন্ত ভার সিআইডিকে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সিআইডি অপহরণের এ ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু করে।
সর্বশেষ রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে খুলনা মেট্রো ও জেলা সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমীন নগরীর দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বর পাশা বনিকপাড়া খানাবাড়ী এলাকায় ভিকটিম রহিমা বেগমের বাড়ি পরিদর্শন করলেও ভিকটিম সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপারের সামনে কোন কথা বলেননি। এমনকি পুলিশ সুপারের কোন প্রশ্নের জবাবও দেননি।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/