মো. ফয়সাল আলম, রাজশাহী প্রতিনিধি : কোরবানিকে সামনে রেখে মানুষ ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। রাজশাহীর হাটগুলোতে কেনাবেচাও জমে উঠেছে। তবে সাধারণ ক্রেতারা নয়, দুরের পাইকাররা ভিড় করছে হাটগুলোতে। হাটে উঠা গরু কিনে নিয়ে ট্রাকে করে তারা যাচ্ছে ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সাধারণ ক্রেতাদের হাটে আসতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করছে হাট কর্তৃপক্ষ। রাজশাহীতে এবারও চাহিদার থেকে বেশি কোরবানীযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, রাজশাহী বিভাগে এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৯টি পশু, যা দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুধু রাজশাহী জেলাতেই চাহিদা ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি হলেও প্রস্তুত রয়েছে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু। চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি অতিরিক্ত পশু অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে।
জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৩০২টি হাটে কোরবানির পশু কেনাবেচা হবে, যার মধ্যে ১৬১টি স্থায়ী ও ১৪১টি অস্থায়ী। হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান ও রোগনির্ণয়ের জন্য ২১৩টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। এছাড়া, জাল টাকা শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, ব্যাংকের বুথ ও ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাও রাখা হয়েছে হাটগুলোতে।
এদিকে রাজশাহী সিটি হাট, তানোরের মুণ্ডুমালা পশু হাট ঘুরে দেখা গেছে, দুরের পাইকারদের কাছে এবার মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। তবে গো খাদ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে সে তুলনায় পশুর দাম বাড়েনি। দাম গত বছরের মতোই আছে।
রাজশাহী সিটি হাটে ঢাকা থেকে গরু কিনতে এসেছেন আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, এক শ এর বেশি গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে তাদের এ অঞ্চল থেকে। সেগুলো নিয়ে গিয়ে ঢাকা ও সিলেটের কোরবানীর পশু হাটগুলোতে তুলবেন।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান জানান, জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি। এর বিপরীতে চার লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় এক লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি পশু বেশি রয়েছে। অতিরিক্ত এসব পশু বিক্রির জন্য নেওয়া হবে দেশের অন্যান্য জেলায়।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. আনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, এখন আর ভারতীয় গরু আসে না। পর্যাপ্ত গবাদিপশুর মজুদ আমাদের নিজেদেরই আছে। বাইরের গরু আসে না বলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আবার চাহিদার তুলনায় মজুদ বেশি থাকায় দাম খুব বেশি বাড়বেও না। ফলে ধরে নেওয়া যায় যে বাজারে এমন দাম হবে যেটা ক্রেতা-বিক্রেতা সবার জন্যই ভালো হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই হাটগুলো জমে উঠবে। বিভাগের সবচেয়ে বড় পশুহাট রাজশাহীর সিটি হাট। এটা ইতোমধ্যেই জমে উঠতে শুরু করেছে।