রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ রামগঞ্জে প্রবাহমান সরকারি খালে বাঁধ দেওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে হুমকিতে পড়েছে চাষাবাদ। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশেই-রাজারামপুর খালের ইউনিয়ন পরিষদ ও শৈরশৈই বাজার সংলগ্ন স্থানে কৃষি মাঠ থেকে ফসলি জমির টপসয়েল ও পুকুর খনন করে ট্রলি দিয়ে মাটি বহন করার জন্য এ বাঁধ দেয় শৈরশেই গ্রামের ইতালি প্রবাসী ও মাটি ব্যবসায়ী হারুন সাদেক। খালটির প্রস্থ কোথাও ৩০ ফুট কোথাও ৪০ ফুট, একসময় এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করত। এখন বাঁধ দেওয়ার কারনে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে শুকনো মৌসুমে পানির অভাব ও বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়। এতে শৈরশৈই, আশাপুরা ও রাজারামপুর কৃষি মাঠে ২শত একর জমিতে চাষাবাদে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ৩ গ্রামের ৫শতাধিক কৃষক। অনেক জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে । তাই কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। এলাকাবাসী বাঁধটি অপসারন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেন।
এলাকার দুলাল মিয়া, আকবর হোসেন, মাসুদসহ ৮ থেকে ১০ কৃষক বলেন, ইতালি প্রবাসী হারুন সাদেক তাঁর মাটি ব্যবসার ম্যানেজার আবুল খায়েরের মাধ্যমে এলাকার জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক নেতা ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ২০২২ সাল থেকে খালে এ বাঁধ দিয়ে মাটি ব্যবসা করে আসছে। এতে বৃষ্টি হলেই পানি সরতে না পেরে খেত পানিতে ডুবে ফসল নষ্ট হয়ে যায় ও শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা যায় না। তাই বাঁধ কেটে খালটি দখলমুক্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্র্মতা আবেদন করা হয়েছে। হারুন সাদেকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি, তবে তার ম্যানেজার আবুল খায়ের বলেন, আমরা সবার সাথে যোগাযোগ করে বাঁধ দিয়েছি। তিনি (হারুন) কয়েকদিনের মধ্যে দেশে আসলে কি করবে সেটা তিনি জানেন।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন ভুমি উপ সহকারী কাজী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বলেন, খালেটির প্রস্থ কোথাও ৩০ কোথাও ৪০ ফুট হবে। বাঁধ দেওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে বাঁধ কেটে দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু এখনো বাঁধ কাটছে কিনা আমার জানা নাই। না কেটে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।
নোঁয়াগাও ইউনিয়ন উপ সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল মুকতাদির বলেন, খালে বাঁধ দিয়ে ফসলি জমি টপসয়েল ও পুকুর খনন করে মাটি নিতে দেখেছি। এতে চাষাবাদ সমস্যা হচ্ছে এটাও সত্য, কিন্তু কৃষকরা এ ব্যাপারে আমার কাছে অভিযোগ দেয়নি।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল পাটোয়ারী বলেন, হারুন সাদেক খালে বাঁদ দিয়ে মাটি আনা নেওয়ার ফলে কৃষকদের চাষাবাদে ক্ষতি করছে, এটা আমাকে অনেকে জানিয়েছেন। আমি আগের নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করছি। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শারমিন ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি, সরেজমিনে তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post