Print Date & Time : 2 July 2025 Wednesday 12:15 am

রামগঞ্জে ঘাস চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

মোঃ আউয়াল হোসেন পাটোয়ারী, রামগঞ্জ লক্ষ্মীপুর থেকেঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। এজন্য ফসল কম হয় এমন আবাদি জমি, বাড়ির আঙ্গিনা, পতিত জায়গা ও সড়কের দুধারে ঘাস চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন অধিকাংশ কৃষক। অনেকেই নিজের খামারের চাহিদা পূরণ করেও বাজারে প্রতি আটি ঘাস ৫০ টাকা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। অনেকেই গবাদিপশুর জন্য বাড়তি খাবার হিসাবে কাঁচা ঘাস কিনে খাওয়াচ্ছেন। এতে দুধের গরুর দুধের পরিমাণ বেশি হচ্ছে।
জানা যায়, ফসল ভালো হয় না এমন জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক। স্থানীয় খামারিরা বাজারের গো- খাদ্যর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিয়ে ঘাসের ওপর ঝুঁকেছেন। একারণে ধানের জমিতে ধান বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যে নিয়মিত সেচ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষক। ধান ও খড় দুটো বেশি উৎপাদন হলে কৃষক অধিক লাভবান হবে।
রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মোঃ হোসেন জানান, আমরা দরিদ্র কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি ৩টি গাভী ও ৩টি ষাড় গরু পালন করেছি। গাভীর দুধ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করি এবং কোরবানির ঈদে সাড়ে ২ ও ৩ লাখ টাকা বিক্রির লক্ষ নিয়ে ৩টি ষাড় পালন করছি। কিন্তু দ্রব্য মূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে গো-খাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু পালন করতে হাপিয়ে উঠেছি। বাধ্য হয়ে এ বছর জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করছি। এতে কিটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না বলে লাভের পরিমাণ বেশি হয়। নিজের পালিত গরুর চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
উপজেলার ভোলাকোট গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ৪টি গাভী ও ৩টি ষাড় গরু পালন করেছি। গো-খাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধির কারণে ঘাস চাষ করছি। এতে বিগত বছরের মতো গো-খাদ্য ও খড়ের ওপর নির্ভর করতে হয়না। বড় সুবিধা হলো ধান চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন ঘাস চাষে একইভাবে উৎসাহিত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, গো-খাদ্যর দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের পতিত যায়গা, অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙিনায় ও সড়কের ধারে উন্নত জাতের ঘাস চাষের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষককে ঘাস চাষে উৎসাহিত করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভারপাপ্ত ডাঃ মোঃ বেলাল হোসেন জানান, উপজেলায় খামারীরা দুধ দহন ও বিক্রির জন্য গাভী ও ষাড় গরু পালন করে। যে পরিমাণ গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে খামারিদের লোকশান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প হিসাবে খামারিদের অনাবাদি জমি ও পতিত জায়গায় উন্নত জাতের ঘাস চাষ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কাঁচা ঘাসে দ্রুত গরুর দুধ বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। অল্পদিনে গরু সুঠাম হবে। উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে সফলতা পেলে গো-খাদ্য নির্ভরশীলতা কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ওই কর্মকর্তা।

দৈনিক দেশতথ্য/এসএইচ//