Print Date & Time : 4 May 2025 Sunday 3:39 am

রূপগঞ্জের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
রূপগঞ্জ উপজেলার নাওড়া গ্রামে রফিক বাহিনীর হামলার ঘটনার মামলা নেয়নি পুলিশ। হামলার সময় গুলিবিদ্ধ তাজেল ইসলাম মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।

গত সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে কায়েতপাড়া ইউনিয়নে রফিক বাহিনীর তাণ্ডবে চোখে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এ ঘটনায় আহত ১৩ জনের ৫ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হামলার ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান নীরব বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এতে হামলাকারী রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই মিজানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৪০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ মামলা নেয়নি।

তবে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা বলেন  অভিযোগ তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগকারী মোস্তাফিজুর রহমান নিরব বলেন, আসামিরা রফিকুল ইসলামের নির্দেশে মিজানুর রহমান ও কালা জসুর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন সন্ত্রাসী শটগান, দা, রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল,সুইচ গিয়ার, চাকু, লোহার রড, এস এস পাইপ, হাতুড়ি নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এই ঘটনায় ১৩ জন আহত হয়। এর মধ্যে ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। বর্তমানে ৫ জন গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছে।

গত সোমবার দুপুরে ও বিকেলে দুই দফায় হামলায় আমাদের পরিবার ও আশপাশের ৬ থেকে ৭ বাড়ির মোট ১৩ জন গুরুতর আহত হয়। আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অস্ত্র উদ্ধার অথবা একজন হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ।

সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ তাজেল ইসলাম নাওড়া গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে। সোমবার দুপুরে সন্ত্রাসীরা ব্যাপকভাবে গুলি চালায়। এতে তাজেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় রফিক বাহিনীর সদস্য আব্দুর রহমান তাকে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মুখমণ্ডল ক্ষতিগ্রস্থ হয়, নাকের ছিদ্র কেটে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে মোক্তার হোসেন বলেন, তাজেলের অবস্থা খুবই গুরুতর। হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মুহাম্মদ জাগু প্রধান, আলাদি প্রধান, মোহাম্মদ আল আমিন, জয়নাল প্রধানও গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হামলার শিকার লিপি প্রধান, মাসুদা প্রধান, জেসমিন প্রধানসহ বেশ কয়েকজন নারী চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু নতুন করে হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে নাওড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রামটিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে।

গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম জানান, রফিক বাহিনী ফের সন্ত্রাসী হামলা করতে পারে এই ভয়ে অধিকাংশ বাড়ির পুরুষরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন।

প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মোতালেব ভূইয়া বলেন, সারাজীবন আওয়ামী লীগ করি। আমাদের দল ক্ষমতায়। এ অবস্থায় দলের হাইব্রিড প্রোডাক্ট ভূমিদস্যু রফিক বাহিনী আমাদের গুলি করছে, বাড়িঘর ছাড়া করছে। স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক ভূমিকার কারনে সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হচ্ছেনা।

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জানুয়ারী ৩০,২০২৪//