খুলনার ফুলতলায় সদ্য বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল ইসলাম শান্ত’র দেয়া ছুরি দিয়েই কলেজ ছাত্র সৈয়দ আলিফ রোহানের বুকের নিচে বাম পাশে আঘাত করে তাছিন মোড়ল বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি শেষে তাছিন মোড়লকে জেলহাজতে প্রেরণ করে খুলনার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত। মামলার অপর আসামি ছাব্বির ফরাজিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের
রিমান্ড আবেদন জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। ফুলতলা উপজেলার এম এম কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র রোহান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত এজহার নামীয় ১নং আসামি তাছিন মোড়ল (১৮) কে বৃহস্পতিবার বিকালে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আজহারুল ইসলাম এর খাস কামরায় নেয়া হয়। প্রায় আড়াই ঘন্টাবাপী জবানবন্দিতে নিজেকে হত্যার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
জবানবন্দিতে তাছিন মোড়ল জানায়, ‘রহমানিয়া এলিমেন্টারি স্কুলে’র বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় ইভটিজিং ও হট্টগোলের প্রতিবাদ করায় রোহানকে হত্যার পরিকল্পনার করা হয়। ফুলতলার তাজপুর গ্রামের সাকি গাজীর পুত্র ও সদ্য বহিস্কৃত ফুলতলা এম এম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুল ইসলাম শান্ত তাকে ধারালো ছুরি দেয়। ঘটনার দিন ৩১ মার্চ দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ঐ ছুরি দিয়েই রোহানের শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত করা হয়। রোহানকে হত্যা মিশনে তাছিন মোড়লসহ সাব্বির ফারাজি, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, শেখ আবু হাসানাত, দীপ্তসাহাসহ অজ্ঞাত আরও বেশ কয়েকজন অংশ নেয়। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ আদালত তাছিন মোড়লকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে এজহার নামীয় ২নং আসামী ছাব্বির ফরাজি (২০) প্রাথমিকভাবে ১৬১ ধারা জবানবন্দিতে কিছু ঘটনা স্বীকার করলেও আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করে। ফলে তাকে আদালতে সোপর্দ করে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। তবে রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য হয়নি।
এরআগে হত্যা মামলা দায়েরের পর-পরই ফুলতলা বাজারের গুড় ব্যবসায়ী দিপক সাহার পুত্র দীপ্ত সাহা কে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন সে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদানের পর তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, গত শনিবার আদালতে দীপ্ত সাহার দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির সাথে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাছিন মোড়লের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির মিল রয়েছে। রোহান হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, কলেজ ছাত্র রোহান খুনের ঘটনাটি দেশ জুড়ে বেশ
চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলে সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনার সাথে ফুলতলা রি-ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাছিন ও সাব্বিরসহ
কয়েকজনের সংশ্লিষ্ঠতা পাওয়া যায়। এরপর সিআইডির এলআইসির একটি চৌকস টিম ঢাকার আশুলিয়া থানার গাজীরচট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এবি//দৈনিক দেশতথ্য//০৮ এপ্রিল,২০২২//

Discussion about this post