ইরফান উল্লাহ, ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে র্যাগিং চলা অবস্থায় হাতেনাতে ধরা হয়েছে ৬জন শিক্ষার্থীকে। সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এসময় অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থীকে পুলিশি হেফাজতে সোপর্দ করা হয়।
অভিুযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের
সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, লিমন হোসেন, কান্ত বড়ুয়া, সাকিব খান এবং ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া।
জানা যায়, গত রাত সাড়ে নয়টার দিকে ভুক্তভোগীদের লালন শাহ হলের ৩৩০ নং রুমে ডাকেন অভিযুক্তরা। ভুক্তভোগী সাইম, রাকিবুল, শামীম, রাকিব, হামজা, তারেক, রিশান, তানভীর এবং মামুনসহ ৩৩০ নং রুমে যান। একপর্যায়ে চারজনকে রেখে (শামীম, সাইম, রাকিবুল, হামজা) বাকিদের এসাইনমেন্ট লেখা লাগবে বললে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর চারজনের ওপর শারীরিক, যৌন ও মানসিক নির্যাতন চালান অভিযুক্ত সাব্বির ও সঞ্চয়।
এসময় ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজনকে নাচতে বলা হয়, আরেকজনকে কল দিয়ে বাজে ভাষা বলতে বলা হয় এবং আরেকজনকে পাঁচ রকম হাসি দিতে বলা হয়৷
এসময় হলের সিনিয়র শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না উপস্থিত হয়ে তাদেরকে হাতেনাতে ধরেন। তিনি বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আসে, হলের ৩৩০ নং রুমে র্যাগিং চলছে। অতঃপর আমি সেখানে গিয়ে দেখি, সাব্বির এবং সঞ্চয় দুজন মিলে ওদেরকে র্যাগ দিচ্ছে। ঘটনা জিগ্যেস করলে তারা অস্বীকার করে।
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বন্ধু ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তখন ভুক্তভোগীরা র্যাগিং চলেছিল এটা নিশ্চিত করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযুক্তদের থানায় পুলিশী হেফাজতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শরীফ শেহান বলেন, আমি হলের কক্ষে ছিলাম না৷ পরে আমাকে ডাকা হয়। এসময় ভিতরে গিয়ে বান্না ভাইয়ের দেখতে পাই৷ এর আগে গতদিন মেসে জুনিয়রদের সাথে আমরা বসেছিলাম। ঐদিন ভিসি, প্রক্টর স্যারের নামসহ, বিভাগের সকল শিক্ষকের নাম জিগ্যেস করা হয়। এসময় কেউ না পারলে তাকে একটু ধমকও দেওয়া হয়। তবে কাউকে মারধর বা শারীরিক নির্যাতন করা হয় নি। বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে কিছুটা সত্যতা রয়েছে বলেও জানান তিনি৷
এদিকে ইবি থানার ডিউটি অফিসার এস আই মাসুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কাছে ছয়জনকে নিয়ে এসেছে। পরে তাদেরকে থানায় পুলিশি হেফাজতে নিরাপদে রাখা হয়েছে। আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাত এগারোটার দিকে নবীন ব্যাচের বারোজন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী এন্ড হাদী ছাত্রাবাসে ডাকেন অভিযুক্তরা৷ পরে তাদেরকে রাত আড়াই টা পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়৷ এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পর্ণ সিনেমার তারকাদের নাম জিগ্যেস করা হয়। কেউকে পর্ণ তারকা সেজে অভিনয়ও করতে বলা হয়। এছাড়া তিনজনকে দিয়ে অশ্লীল কবিতা পাঠ করানো হয় এবং নানারকম হুমকিও দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, সাব্বির, সাকিব, শেহান, কান্ত বড়ুয়া এবং জিহাদ।

Discussion about this post