শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন, লালমনিরহাট: অর্থ পাচার ও হত্যাসহ ১০টি মামলায় লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা সেতুর টোলপ্লাজায় তাকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, জমি দখল, হুন্ডি ব্যবসা, চোরাচালান, টেন্ডারবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগে ১০ মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল কাদের জানান, সদর থানায় অর্থপাচারসহ ৩টি, ঢাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ৬টি ও রংপুরের একটি হত্যা মামলায় পলাতক ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন সুমন খাঁন।
গতকাল সোমবার রাতে কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এসএন পরিবহনের একটি স্লীপার নৈশ্যকোচে ঢাকা যাচ্ছেন সুমন খাঁন।
এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সদর থানা পুলিশ তিস্তা সড়ক সেতু টোল প্লাজায় বাসে তল্লাশী চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর রাতে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাই সরকার বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় সুমন খান, তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমা ও কর্মচারী তৌকির আহমেদ মাসুমের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে মামলা দায়ের করে ছিল। এ মামলায় সিআইডি দাবি করে, সুমন খানের ব্যাংকে ২৩৭ কোটি ৪৯ লাখ ৪৮ হাজার ৭৬০ টাকা, তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার রুমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩১০ টাকার সন্ধান মেলেছে। সুমন খানের কর্মচারী লালমনিরহাট পুরান বাজার এলাকার বাসিন্দা হারুনের ছেলে তৌকির আহমেদ মাসুমের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৮৬ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ১২৭ টাকা পাওয়া গেছে। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থের জমা, স্থানান্তর ও রূপান্তর করা হয়। সিআইডির এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন সুমন খাঁনকে।
এদিকে সুমন খানের পরিবার দাবি করেছেন, সুমন খানের মৃত পিতা একজন লালমনিরহাটের বিশিষ্ট সার,কীটনাশ ও বিভিন্ন মনিহারি সাগ্রীর ডিস্টিবিউটর ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে একমাত্র পুত্র হওয়ায় সে পিতার সম্পদের উত্তরাধিকারী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনিও বাবার ব্যবসা বাণিজ্যে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তার পাশাপশি হোটেল, রেষ্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল ও নিরাপদ বাজার নামে নিত্য পণ্যের করপোরেট বাণিজ্য করেন। ছিলেন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার, তার পানি উন্নয়ন বোর্ড, গণপুর্ত, সড়ক জনপদ, এলজিইডিসহ নানা সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারী ব্যবসা ছিল। তার বিরুদ্ধে বিগত দিনে কোন মামলা ছিল না। সরকার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক ভাবে হেয় করতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে সে রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ ট্যাক্স হোল্ডার হয়ে ছিল।
লালমনিরহাটে সুমন খান হতদরিদ্র মানুষের কাছে একজন মানবিক মানুষ। বিগত করোনাকালীণ সময়ে সাধারণ দিনমজুর মানুষকে দুই হাতে অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিল। তার শতশত সামজিক সহায়তামূলক কর্মকান্ডের নজির রয়েছে।