শেখ সুদীপ্ত শাহীন, লালমনিরহাট: বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছেন কৃষক। রোপিত চারা ধানের গুচ্ছে গ্রামীণ জনপদে সবুজে সমাহার। ফসলের মাঠ হয়ে উঠেছে সৌন্দর্যের প্রতীক।রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় জেলার বোরো ধানের চারা রোপন প্রায় শেষ পর্যায়ে। গ্রামের ফসলের মাঠ গুলির ধানের চারা রোপনের কয়েক দিন পর সৃষ্টি করেছে সবুজের সমারহ। সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। ফসলের মাঠের এক রকমের মোহনীয় রূপ থাকে। যারা গ্রামে বসবাস করেন তারা এর পুরো রূপ-লাবণ্যে উপভোগ করতে পারেন। ঋতু রাজ বসন্তে শুধু শিমুল শাখে ফুলের সমারোহ থাকে তা কিন্তু নয়। সব রকমের ফুল ফুটেছে। সেচ নির্ভর ফসলের মাঠেও বসন্তের শুরুতে অন্য রকম সবুজে ছেঁয়ে গেছে।
রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা উপজেলা সফলের মাঠ এমন কি চরাঞ্চল গুলোর বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করা পর হয়েছে সবুজ। তীব্র শীত উপেক্ষা চারা রোপন করেছে কৃষক।
অন্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে রংপুরাঞ্চলে তিনগুণ বেশি জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। খরচের তুলনায় আমন ধানের এবার দাম ভালো পেয়েছে। তাই ইরি ও বোরো ধানের আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর জেলায় ইরি-বোরো ধানের মধ্যে হাইব্রিড ও উফসী জাতের ধান বেশি আবাদ হয়। হিরা-১, হিরা-২, সোনার বাংলা, ব্রি ধান ২৮, ব্রি-২৯, ব্রি ৮১, ব্রি -৭৪, ব্রি -৮৯ সহ স্থানীয় নানা জাতের কিছু ধানের চাষও করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে শীতে বীজ তলা ঝুঁকিতে ছিল কিন্তু কৃষক সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠছে। রংপুরের কৃষকেরা ভোর থেকে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফসলের ক্ষেতে সেচ দিয়ে। প্রতিটি গ্রামে এখন বিদ্যুত পৌচ্ছে গেছে। রয়েছে জেলায় ছোটবড় প্রায় শতাধিক সৌর চালিত সেচ পাম্প। তেল চালিত সেচ যন্ত্রের উপর নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে। বিদ্যুত চালিত ও সৌর চালিত সেচ ব্যবস্থার কারণে রোপা আমন ধানের উৎপাদন খরচ কিছুটা হলেও কম হবে। সরকার নদী খাল বিল খনন ও সংস্কার করায় ছোট ছোট্ট নদীতে পানি প্রবাহ দিয়ে নদী তীরবর্তী জমি গুলোতেও রোপণ করা হচ্ছে বোরো ধান।
তিস্তা, ঘাঘট, যমুনাশ্বরী, সানিয়াজান, রত্নাই, বুড়ি তিস্তা, দুধকমার,করতোয়া নদের চরাঞ্চলের জমিতে এবছর রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। ধানের চারা রোপণে এবছর কৃষি শ্রমিক সংকট ছিল। দুর-দুরান্ত থেকে শ্রমিক আনতে হয়ে ছিল। এমন কী নারী শ্রমিকরা ধানের চারা রোপনে কাজ করেছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, এবারে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে এক লক্ষ ৩৫ হাজার ৮শ মেট্রিক টন প্রায়। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগ বালাই না হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। প্রতি হেক্টরে হাইব্রিড ৫.৮১ মেট্রিক টন এবং উচ্চ ফলনশীল ৬.২৪ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post