শেখ নাদীর শাহ্,পাইকগাছা(খুলনা) :পাইকগাছার কপিলমুনির কাশিমনগরে বালুবাহী ট্রলি দূর্ঘটনার জন্য এর চালকই দায়ী বলে দাবি করছেন প্রত্যক্ষদর্শীসহ পথচারী স্কুল ছাত্রীরা। ঘটনার সময় এর চালক ইয়াছিন আলীসহ তার সাথে থাকা কয়েক কিশোর ঘটনাস্থলের কয়েক শ’ গজ আগে বটতলা থেকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরা দু’ছাত্রীকে টার্গেট করে তাদের পিছু নেয়। এসময় তারা তাদের উদ্দেশ্য করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও উত্যক্ত করতে থাকে। এসময় ছাত্রীদ্বয় ভয়ে রাস্তার একেবারে পাশে চলে আসলেও তারা পিছু ছাড়েনা। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলের আগে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় পৌছালে ট্রলিটি ছাত্রীদের পাশ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে। এসময় চালকসহ সাথে থাকা কিশোররা সমোচা (ভাজা) খাচ্ছিল। এর আগে অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম তাদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হলে নিজেকে রক্ষায় মসজিদেও দেওয়াল ঘেঁষে গিয়ে দাঁড়ায়। মূলত একহাতে ট্রলির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে না পেরে চালক রফিকুলকে দেওয়ালের সাথে পিষ্ঠ করে। আর ছাত্রীরা আত্নরক্ষায় পাশের খাদে লাফিয়ে পড়ে। ঘটনার পর ছাত্রীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে এখনো শয্যাশায়ী।
এদিকে ঘটনায় রফিকুল ইসলাম (৫২) এর পা দুমড়ে-মুচড়ে ও পেটের নাড়ী-ভুড়ি বেরিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে প্রাথমিক অপারেশন শেষে আইসিইউতে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২০ মে) সকালে মৃত্যু হয় তার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘটনার সময় কাশিমনগর গ্রামের মৃত বাবু মোড়লের ছেলে রফিকুল বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে মসজিদের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় কপিলমুনির থেকে মাগুরখালীগামী বালুভর্তি একটি দ্রুতগামীর ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে মসজিদের ওয়ালের সাথে পিষ্ঠ করে। রফিকুল স্থানীয় কাশিমনগর বাজারের শেখ রবিউল মেম্বরের মীম এন্টারপ্রাইজের মুহুরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ট্রলির মালিক উপজেলার উত্তর সলুয়ার মোসলেম শেখ’র ছেলে সালাউদ্দীন শেখ এবং এর চালক নোয়াকাটির জনৈক ফজর আলীর ছেলে ইয়াছিন আলী (২০)। ইয়াছিন বাবার কাছ থেকে পৃথক মায়ের সাথে কলেজ রোড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, সালতা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণ ও তালতলা-কাশিমনগর সড়ক নির্মাণের পর থেকে সেখানে ট্রাক্টর দিয়ে নির্মিত ট্রলির চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে স্থানীয় একটি সরকারী খাল থেকে মাটি কর্তন করে বিভিন্ন ইট ও টালী ভাটায় সরবরাহের ঘটনায় রাস্তাটিতে ট্রলির চাপ বাড়ে। আর অধিকাংশ ট্রলির চালক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও বিকৃত মানসিকতার হওয়ায় প্রায়ই সড়কটিতে ছোট-বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। এর আগেও সড়কটিতে ট্রলি চাপায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post