নিজস্ব প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারাধীন মামলার বাদীর সাড়ে তিন বছরের শিশুকে স্বাক্ষী করে পুলিশের তলবের প্রতিবাদে শিশুর মা সাবরিনা কবির সেতু সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোববার বিকেলে কাঙাল হরিনাথ প্রেস ক্লাবের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শিশুর মা সাবরিনা কবির সেতু তার লিখিত বক্তব্যর মাধ্যমে জানান, ২০১৭ সালে শৈলকুপা থানার কীর্ত্তি নগর গ্রামের আব্দুর শুকুরের ছেলে বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পরিদর্শক উজ্জল হোসেনের সাথে তার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই তার স্বামী বিভিন্ন অজুহাতে টাকা দাবি করে। সেসময় বেশ কয়েক বারে তার স্বামী উজ্জ্বলকে ১২ লক্ষের অধিক টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত বছরের মাঝামাঝিতে আবারও ৫ লক্ষ টাকা দাবি করলে তিনি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় তার উপর শুরু হয় মানুষিক ও শারীরিক নির্যাতন। তিনি আরো বলেন দৌলতপুর থানায় চাকরি রত অবস্থায় তাকে বাসায় নিয়ে গিয়ে পরপর দুইবার গভীর রাতে বাসার দরজায় কয়েকজন লোক এসে করাঘাত করে এবং রুমে ঢোকার চেষ্টা করে তখন ভীত হয়ে তার স্বামীকে ফোন দিলে কথার গুরুত্ব না দিয়ে ফোন বন্ধ করে রাখে। এমনকি পরবর্তীতে আর কোন খবর রাখেনি তার স্বামী। পরিকল্পিতভাবে এটা করেও যখন টাকা নিতে পারেনি তখন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাসা থেকে বের করে দেয়। এরপর তিনি বাবার বাড়িতে চলে আসেন। কিছুদিন পর উজ্জ্বল তার বাবার বাড়িতে এসেও মারধর করে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের শেষের দিকে তিনি কুষ্টিয়া আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ও যৌতুক নিরোধক আইনে মামলা করার পর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় যৌতুকের মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়ে তার স্বামী উজ্জ্বল মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস ২০/২৫ জন লোক নিয়ে তার বাবার বাড়িতে এসে প্রাণনাশের হুমকী দেয়। যেকারণে তিনি উজ্জ্বলের বর্তমান কর্মস্থল যশোর এসপি অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত প্রেরন করেন। কিন্তু পরপর দুইবার চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ৩ ও ৯ তারিখে তার সাড়ে তিন বছরের মেয়ে জিনাত আরা বিনিকে যশোর জেলা পুলিশ কর্তৃক স্বাক্ষী করে তলব করায় তিনি শংকিত হয়ে পরেন। যেহেতু মামলা চলমান রয়েছে এবং তার স্বামী যশোর অভয়নগর থানায় পুলিশে উপ -পরিদর্শক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন সেকারণে তার আইনজীবীর পরামর্শক্রমে মেয়েকে নিয়ে হাজির হননি। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ও তার শিশুকে স্বাক্ষী করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণসহ সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।