Print Date & Time : 15 May 2025 Thursday 4:53 am

শ্রীপুরে র‍্যাব পরিচয়ে শ্রমিকদের বেতনের টাকা ছিনতাই : গ্রেপ্তার ৫

গাজীপুর সংবাদদাতা: গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতনের টাকা তুলে নিয়ে ফেরার পথে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-চক্রের মূলহোতা হামিম ইসলাম (৪৫),মো.জিন্নাহ মিয়া (২৭), মো. আমিন হোসেন (৩০),মো.রুবেল ইসলাম (৩৩), মো. আশিকুর রহমান (৪২)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থা আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

তিনি বলেন,৬ জুন বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুরের সেলভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের তিন কর্মকর্তা একটি প্রাইভেট ব্যাংক থেকে কারখানার শ্রমিকদের বেতন, ঈদ বোনাস ও পরিবহন খরচের সাড়ে ১৯ লাখ টাকা নিয়ে প্রাইভেটকার দিয়ে কারখানায় ফিরছিলেন। তাদের বহনকারী গাড়িটি কারখানার কাছাকাছি আসলে একটি একটি গাড়ি তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। এসময় র‌্যাবের জ্যাকেট পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কর্মকর্তাদের অপহরণ করে গাড়িতে তুলে নিয়ে মারধর করে। গাজীপুর-ময়মনসিংহ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। পরবর্তীতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকায় তিনজনকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

গ্রেফতার ডাকাত সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত বলেন,ডাকাত দলটির প্রধান হামিম। এই ডাকাত দলে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য রয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃতরা ডাকাতি কাজে মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করতো বলে জানা যায়। ৩ থেকে ৪ বছর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে গাজীপুর,টঙ্গী,উত্তরাসহ রাজধানীর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির করত। ডাকাতির কৌশল হিসেব বিভিন্ন সময় নিজেদেরকে র‌্যাব,পুলিশ,ডিবি,সাংবাদিক ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া সদস্য পরিচয় প্রদানসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গাড়িতে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন বাহিনীর লোগো সম্বলিত স্টিকার ব্যবহার করত।

দলের কিছু সদস্য ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নজরদারি করে। বেশি অর্থ উত্তোলনকারী ব্যক্তিকে টার্গেট করে বাহিরে অবস্থানকৃত চক্রের অন্য সদস্যদেরকে জানিয়ে দিতো। পরবর্তীতে সুবিধাজনক স্থানে টার্গেটকৃত ব্যক্তির গাড়ির গতিরোধ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। মারধর করে তার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যেত। তারা মাসে ২ থেকে ৩টি ডাকাতি করত।

চক্রটি পবিত্র ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে কয়েকটি সম্ভাব্য স্থানে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল বলে জানা যায়। রুবেল দীর্ঘ দিন ধরে ডাকাতি পেশায় জড়িত। সে চক্রের মূলহোতা হামিমের প্রধান সহযোগী। ডাকাতির কৌশল হিসেবে বিভিন্ন সময় নিজেকে ভুয়া সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া সদস্য পরিচয় দিতো।

বরিশাল, ফরিদপুর,গাজীপুর,রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া ডিবি ও র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতি করেছে রুবেল। ব্যাংক থেকে বের হওয়ার তথ্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হামিম জানিয়দিতো রুবেল। ডাকাতি মামলা বেশকয়েকবার গ্রেফতার হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ,মাদক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মিথ্যা পরিচয়ে ডাকাতির অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।

গত ৬ জুন বিকেলে সাড়ে ১৯ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় শ্রীপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে নেমে রাজধানীর রামপুরা ও উত্তরা এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস,দুটি খেলনা পিস্তল,দুইটি হাতে তৈরি র‌্যাব জ্যাকেট,দুটি র‌্যাবের ক্যাপ,০১টি হ্যান্ডকাফসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। আসামিদের কাছ থেকে ১ লাখ ৬২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//