Print Date & Time : 20 April 2025 Sunday 6:59 am

সকালে স্ত্রীর মৃত্যু বিকালে পুলিশ হেফাজতে স্বামীর মৃত্যু

জেলার হাতীবান্ধা থানায় পুলিশ হেফাজতে শুক্রবার বিকালে হিমাংশু (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। এই যুবকের স্ত্রী সাবিত্রী রানী(২৪) এর লাশ শুক্রবার সকালে নিজবাড়ি হতে পুলিশ উদ্ধর করে। স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ স্বামী হিমাংশুকে আটক করে হাতীবান্ধা থানায় নিয়ে যায়। বিকেলে জেলা পুলিশের এসএসপি সার্কেল, হাতীবান্ধা থানার ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহাবুব ফোর্স নিয়ে মৃতের বাড়িতে এসে জানায় পুলিশের হাতে আটক হিমাংশু থানায় স্ত্রী শোকে মারা গেছে।  স্বামী – স্ত্রী দু’জনের লাশ থানায় রয়েছে। রাতে ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়না তদন্ত শেষে আগামী কাল শনিবার সকালে লামনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে লাশ দুইটির পোষ্টমর্টেম করতে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় পূর্ব কদমা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসছে।

থানা পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার  ভেলাগুরি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা গ্রামে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টায়  হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী মৃতদেহ পারিবারিক পুজোর স্থান তুলশিতলা হতে থানা পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এসময় স্ত্রীকে পারিবারিক কোলহের জের ধরে স্বামী হত্যা করেছে বলে পুলিশ ও গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। স্ত্রীর লাশের সাথে স্বামী হিমাংশু কে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। এই সময় ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশের এসআই মাহাবুব ছিল। দুপুরের পরপর স্বজনরা থানায় গিয়ে হিমাংশু সাথে দেখা করতে চায়। পুলিশ দেখা হবে না বলে জানায়। মৃত স্ত্রীর লাশ লালমনিরহাটের মর্গে পাঠানো হবে বলে জানিয়ে দেয়। পরে পুলিশের হাতীবান্ধা থানা সার্কেলের এএসপি, হাতীবান্ধা থানার ওসি, এসআই মাহাবুব সহ পুলিশের একটি বিশাল বহর দ্বিতীয় বারের মত মৃতের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে স্বজনদের বলেন, হিমাংশু থানায় মারা গেছে। সে থানা হেফাজতে ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে। হিমাংশুর পূর্ব কদমা গ্রামের বিষেশ^র বমনের পুত্র। হিমাংশুর বাবা বিষেশ^র বর্মন ভেলশা জানান, তার পুত্রকে পুলিশ নির্যাতনে মেরে ফেলেছে। তিনি পুত্র হত্যার সুবিচার চায়। এ ঘটনায় হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এরশাদুল আলম বলেন, ‘থানায় হিমাংশুর মৃত্যু ইন্টারনেটের সংযোগের তার গলায় পেঁচিয়ে। তদন্ত কর্মকর্তা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরের খাবার আনতে বাহিরে যায়। এসে দেখে গলায় তার প্যাঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে। রাতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল রিপোর্ট করা হবে। পরে আগামী কাল শনিবার সকালে স্বামী- স্ত্রীর  লাশ দু’টি লালমনিরহাট মর্গে পাঠানো হবে। হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হিরম্ব বর্মন জানান, বিকেল ৪টার দিকে এক ব্যক্তির মরদেহ নিয়ে আসে পুলিশ জরুরি বিভাগে। সে হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছে। মরদেহ টি হাসপাতালে রেখে গেছে। এখন পর্যন্ত এই যুবকের  আর কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ।

পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, এই ঘটনায় পুলিশের ৩ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটিতে থাকবেন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার,  এসপি হেডকোয়াটার ও সার্কেল এএসপি। ছুটিতে থাকায় মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পথে আছি আগামীকাল  শনিবার অফিস অডার করা হবে।