Print Date & Time : 11 May 2025 Sunday 3:18 am

সিদ্ধিরগঞ্জে নয় শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত

সিদ্ধিরগঞ্জে একটি বিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষার্থীর এ বছরের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না এ খবরে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। পরীক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে ও বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মানববন্ধন করে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায় অবস্থিত পাইনাদী প্রি ক্যাডেট স্কুল যা বর্তমানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মডেল স্কুলের ৯ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খলিলুর রহমানের গাফলতিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মডেল স্কুলের ৯ শিক্ষার্থী ৮ম শ্রেণিতে পাশ করার পর একই বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নিয়মিত প্রয়োজনীয় ফি ও বেতন পরিশোধ করে লেখাপড়া করে আসছিল। এছাড়াও চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য মডেল টেস্ট পরীক্ষাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু গত সোমবার বিদ্যালয়ে এসে জানতে পারে কর্তৃপক্ষ তাদের রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন না করায় এ বছর তাদের এসএসসি পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমিন, সুখী, জান্নাত, মেহেরুন, মীম, কবিতা, তন্নি, আফসানা, সোনালী ও তাদের অভিভাবকরা এ খবরে মর্মাহত হয়ে পড়ন। শিক্ষার্থীরা কান্না জড়িত কন্ঠে জানায়, প্রধান শিক্ষকের ভুলে প্রস্তুতি নিয়েও আমরা পরীক্ষা দিতে পারছি না। আমাদের জীবন থেকে একটি বছর চলে যাবে। এ জন্য আমরা দায়ী নয়। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার দাবিতে হাতের লেখা প্লাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করেছে। এরপর অভিভাবকদের সাথে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও মানববন্ধন করেন।

অভিভাবক জাকিয়া বেগমসহ সকলের একটাই দাবি, আমাদের সন্তানদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা নিয়মিত বেতন ও কোচিং ফি ও অতিরিক্ত ফি দিয়েছি। আমরা এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মেহেরুন জানায়, আমরা ২০১৯ সালের অষ্টম শ্রেনীর জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২০ সালে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হই। তিনমাস ক্লাস করার পর করোনা মহামারি শুরু হলে স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ১১জন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন ফিও নেয়া হয়। ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের লক্ষ্যে আমাদের মডেল টেষ্ট পরীক্ষা বাবদ ফি এবং পরীক্ষাও নেয়। পরীক্ষা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুতি নেয়ার পর এখন জানতে পারি আমরা এ বছর পরীক্ষা দিতে পারব না। আমাদের রেজিষ্ট্রেশন এক বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। এই বিষয়টি জানতে পেরে আমরা মর্মাহত। বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার ইসলামকে বিষয়টি অবগত করলেও আমরা কোন সুরাহা পাইনি। আমরা প্রতারক প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানের শাস্তি দাবি করছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের সহকারী না আসায় সময়মত ৯ শিক্ষার্থীরা রেজিষ্ট্রেশন করা হয় নাই। অনুমোদনহীন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ের নামে পরীক্ষা দিয়ে থাকে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব জানান, এ বিদ্যালয়ের কোন অনুমোদন নাই। তাদের বিষয়ে আমার কিছুই করার নাই। তবে ধরনের বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে জানান।

আর//দৈনিক দেশতথ্য//১৪ জুন-২০২২//