সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজ সংস্কার শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্রিজের কাজ শুরু করে দিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ।
সংস্কার করার জন্য বুধবার থেকে ব্রিজটির দুই প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে সকল ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। সেতু বন্ধের ঘোষণা দিয়ে ব্রিজের দুই পাশে নোটিশ লাগানো হয়েছে। কাজের মেয়াদ দুই মাস ধরা হলেও এর আগেই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ।
সওজ সূত্রে জানা গেছে, কিনব্রিজ সংস্কারের জন্য ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বছরেরই জুনে বরাদ্দের টাকা রেলওয়ের সেতু বিভাগকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। সেতুটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও এটি সংস্কার করবে রেলওয়ের সেতু বিভাগ। আর সেতুটি দেখভাল করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। বুধবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে ব্রিজের কাজ শুরু করে দিয়েছে রেলওয়ে।
সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বুধবার থেকে কিনব্রিজে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই মাস সংস্কার কাজ চলবে। সংস্কার শেষে আবারও জনসাধারণের জন্য এটি খুলে দেওয়া হবে।
রেলওয়ে বিভাগের পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার দুপুর সকাল থেকে ব্রিজটির উপর ও নিচে একযোগে কাজ শুরু হয়েছে। মেয়াদ দুই মাস থাকলেও আশা করছি দুই মাসের আগেই কাজ শেষ করতে পারবো।
উল্লেখ্য, আসাম প্রদেশের গভর্নর মাইকেল ক্বীন সিলেট সফরে আসার জন্য সুরমা নদীতে ব্রীজ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কারণ তখন আসামের সাথে সিলেটের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ট্রেন। ফলে, রেলওয়ে বিভাগ ১৯৩৩ সালে সুরমা নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এবং নির্মাণ শেষে ১৯৩৬ সালে ব্রীজটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। আব্দুল মজিদ কাপ্তান মিয়া, তৎকালীন আসাম সরকারের এক্সিকিউটিভ সদস্য রায় বাহাদুর প্রমোদ চন্দ্র দত্ত এবং শিক্ষামন্ত্রী আবদুল হামিদ ব্রীজটি নির্মাণের ক্ষেত্রে অশেষ অবদান রাখেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ডায়নামাইট দিয়ে ব্রীজের উত্তর পাশের একাংশ উড়িয়ে দেয়। যা স্বাধীনতার পর কাঠ ও বেইলী পার্টস দিয়ে মেরামত করা হয় ও হালকা যান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হয়। পরে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগিতায় ব্রীজের বিধ্বস্ত অংশটি কংক্রীট দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা হয়। এরপর আর বড় ধরনের সংস্কার হয়নি।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১৭ আগস্ট ২০২৩

Discussion about this post