দিনব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে কেমুসাস বইমেলার নবম দিন অতিবাহিত হয়েছে শনিবার। নবম দিনে মেলা প্রাঙ্গণে প্রচুর ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
মায়ের সাথে করে প্রথমবার কেমুসাস বইমেলায় এসেছে অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিনা। জসীম বুক হাউসের স্টলে বসে একটার পর একটা বই দেখতে দেখতে প্রায় ৫ টি বই পছন্দ হলো তার। মা লিজা আক্তার বই ৫ টি কিনে দেওয়ার পর একটি আনন্দের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ছিলো তার চোখে-মুখে।
বইমেলায় ‘দোঁআশ’ স্টলে কথা হয় গল্পকার তাসলিমা খানম বীথির সাথে। মেলায় এসেছে তার গল্পগ্রন্থ ‘সাতাশ কিলোমিটারের দাম্পত্য’। তিনি জানান, প্রথম দিন থেকে মেলায় দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকলেও এখন প্রতিদিনই আনাগোনা বাড়ছে। বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন মেলাকেন্দ্রীক কর্মসূচী থাকায় সকল শ্রেণী পেশার লোকজন মেলায় আসছেন।
এদিকে বইমেলা প্রাঙ্গণে বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপের মধ্যে উপস্থিত বক্তব্য প্রতিযোগীতা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেমুসাস বইমেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ ছয়ফুল করিম চৌধুরী হায়াত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেমুসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশওয়ার মোশারাফ ও হেলাল হামাম।
প্রধান অতিথি কেমুসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী বলেন, বই সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে পরিচালিত করে মানুষকে বিশুদ্ধ করে তোলে। মানুষ জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণের জন্য বইমেলায় ছুটে আসে। বই পড়ায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলাকেই বইমেলার আসল উদ্দেশ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘জঙ্গিবাদকে যারা উৎসাহিত করে, যে বই পড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম জঙ্গিবাদে উৎসাহিত হবে,সে সব বই কেমুসাস মেলায় রাখা হয় নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। আমরাই একমাত্র জাতি নিজের মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রক্ত দিয়েছি। পৃথিবীর আর কোনো জাতি নিজের মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দেয়নি।’ সুতরাং বাঙ্গালীর বইমেলা মানেই মহা আনন্দ উৎসব। এই উৎসবে সকলকে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এবারই প্রথম কেমুসাসের উদ্যোগে বইমেলা হচ্ছে ১৬ দিনব্যাপী। বিজয় দিবসের প্রথম দিনে শুরু হওয়া এই মেলা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিনেই শেষ করা হবে। নতুন প্রজন্মকে মেলামুখী করার লক্ষে প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রতিযোগীতামূলক এইসব কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, আমরা মেলায় দর্শনার্থীর কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিদিন ব্যাপক কর্মসূচীর আয়োজন করেছি। সবকিছু মিলে একটি সমৃদ্ধ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মেলার মূল লক্ষ। বিশেষ করে দেশের স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থার প্রকাশিত বইগুলো সংগ্রহ করার সুযোগ পেয়ে সকলেই পাঠমুখী হবেন।
এবারের বইমেলাটি সাহিত্য সংসদের সাবেক সভাপতি দেওয়ান ফরিদ গাজীর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। দরগাগেইটস্থ সংসদ চত্বরে আয়োজিত বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//ডিসেম্বর ০৯,২০২৩//