আর মাত্র নয় দিন পর অনুষ্ঠিত হবে পূণ্যভূমি সিলেট সিটির ভোট। এই সিটির নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা এখন বেশ তুঙ্গে। গতানুগতিক প্রচারে বাইরে যুক্ত হয়েছে নানা কৌশল। পথসভার পাশাপাশি মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও ব্যবহার করছেন প্রার্থী ও তার কর্মী সর্মথকরা। প্রতিবারের মতো এবারও অধিকাশং প্রার্থীর প্রচারেই যুক্ত হয়েছে ‘নির্বাচনি গান’। গানের মাধ্যমে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে। এতে বিনোদন পাচ্ছেন কর্মী-ভোটার সবাই। সব মিলিয়ে ‘ভোটের গানে’ জমজমাট প্রচারণা।
তবে এবার স্লোগানে কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে। প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়াসহ মার্কা ও দলের পরিচিতি তুলে ধরা হচ্ছে সুরে সুরে।
সোমবার (১২ জুন) সকালে নগরীর বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রচারণায় স্থান পাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে হচ্ছে−‘জয় বাংলা জিতবে আবার নৌকা/শেখ হাসিনার সালাম নিন, জয় বাংলা-নৌকা মার্কায় ভোট দিন’ ‘ভোট চাই ভোটারের, দোয়া চাই সকলের।’ ‘আনোয়ার ভাইয়ের সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন।’ এগুলো অন্যতম।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের প্রচারণাও চলছে ভিন্ন ভিন্ন গান। তার প্রচারণায় স্থান পাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে হচ্ছে− ‘হায়রে লাঙ্গলের জোয়ার-এরশাদ বাংলার অহংকার, সিলেট সিটি নির্বাচনে বাবুল ভাইইই আমরার’ ‘নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী বাবুল ভাই, আমরা তাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই’ ‘তোমরা পল্লীবন্ধুরে ভুইলা যাইয়ো না, তোমরা বাবুল ভাইরে ভুইলা যাইয়ো না’ অন্যতম।
অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসানের প্রচারে বাদ্যবিহীন সঙ্গীতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এছাড়াও মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামেও নগরীর ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে নানা গান বাজছে। পাড়া-মহলা ও অলিগলিসহ প্রার্থীদের নির্বাচনি অফিসে সাউন্ড সিস্টেমে এসব গান বাজানো হচ্ছে। গান শুনতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা।
সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম। এর মধ্যে জাকের পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রচারণায় অনেক পিছিয়ে পড়েছেন। নগরীতে তাদের প্রচারণা খুব একটা চোখে পড়ার মতো নয়। ভোটের মাঠে এখন আনোয়ারুজ্জামান, বাবুল ও মাহমুদুল হাসানকে নিয়েই জোর আলোচনা।
আর কাউন্সিলর পদে ৩৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যাদের মধ্যে ২৭৩ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (নারী কাউন্সিলর) ৮৭ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। আগে ২৭ ওয়ার্ড নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন থাকলেও বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ড নেয়ে সিসিকে এখন মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটর রয়েছেন ৬ জন।
২০০২ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিলেটের সকল ওয়ার্ডে এবারই প্রথম হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ।
খালিদ সাইফুল, দৈনিক দেশতথ্য, ১২ জুন ২০২৩

Discussion about this post