ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সঞ্চিত পুঁজি হারিয়ে মহা বিপাকে
শুকনো সুপারি আটক নিয়ে আলাউদ্দিননগর তিস্তা টু ৫১ বিজিবি বিওপি ক্যাম্পের লুকোচুরি খেলা। আজ বুধবার দুপুরে ভারী বৃষ্টির মধ্যে আটক বিপুল পরিমাণের শুকনে সুপারি গোপনে হ্রাসকৃত মূল্যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে নিলাম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ।
আটক পিকাপ ও আটক পিকাপ চালক ইকবাল(৩২) কে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় বলে বিজিবি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই ঘটনায় ক্ষুদ্র সুপারি ব্যবসায়ী গণ সারা জীবনের সঞ্চিত পুঁজি খুইয়ে পথে বসেছে। বৈধভাবে আনা সুপারি বিজিবির আটক ও নিলামের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এই ঘটনায় ন্যায় বিচার পেতে আদালতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২৭ আগষ্ট সন্ধ্যা ৭ টায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলা একতা বাজারে শুকনো সুপারির ব্যবসায়ি গণ সৈয়দপুর হতে পিকাপ ভর্তি ২৭ বস্তা সুপারি ( যার ওজন ২ হাজার ৭৯ কেজি) বাজার মূল্য প্রায় ৮ লাখ টাকা। বিক্রি উদ্দেশ্য নিয়ে যায়। এসময় রংপুর তিস্তা টু ৫১ বিজিবির আলাউদ্দিন বিওপি ক্যাম্পের টহল দল আটক করে। ব্যবসায়ীরা এই সব সুপারি মনিহারী দোকান ও খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে পাইকারি ভাবে বিক্রি করত। বিজিবির টহলদল আটক সুপারি ভারতে পাচার করার অভিযোগ তুলে। ব্যবসায়ীরা বিজিবিকে তাৎক্ষণিক কাগজপত্র দেখায়। তাদের বিওপি ক্যাম্পে যেতে বলে কিন্তু বিজিবির বিওপি ক্যাম্পে গেলে ব্যবসায়ীদের কোন সহযোগিতা করেনি। উল্টো মামলার ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
২৭ আগষ্ট রাতেই রহস্যজনক কারণে আটক পিকাপ ও পিকাপ চালক সৈয়দপুরের ইকবাল(৩২) ছেড়ে দেয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও বিজিবির নিকট সুপারি আটকের কারণ উদঘাটন করতে পারেনি। তাদের কে আটক সুপারি কাস্টমসে জমা ও নিলামের খবর জানানো হয়নি।
এ ব্যাপারে রংপুর ৫১ বিজিবির আলাউদ্দিননগর বিওপি ক্যাম্পের সাথে মঙ্গলবার রাতে মিডিয়া কর্মীরা যোগাযোগ করলে তারা মোবাইল ফোনে ( রেকর্ড আছে) জানান, ভারতে পাচারের সন্দেহে পিকাপ ভর্তি শুকনো সুপারি আটক করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তার স্ত্রীর পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়ার কারনে ছুটিতে আছে। তাই আটক সুপারি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট এখনো জমা দেয়া হয়নি। আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে আজ বুধবার বিকেলে পাটগ্রাম উপজেলা কাস্টমস কর্মকর্তা মোঃ শারওয়ার আলম জানান, বিজিবির হাতে আটক ১৬ শত ২০ কেজি শুকনো সুপারি আড়াই শত টাকা কেজি দরে দুপুর ২ টায় নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে বিক্রি করা হয়েছে। আটক সুপারির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মন্টু ও ফজলে জানান, বৈধ কাজপত্রের মাধ্যমে ব্যবসার সকল নিয়ম মেনে দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুর হতে শুকনো সুপারি কিনে এনে জেলা ও উপজেলার হাটবাজারে পাইকারি ভাবে সরবরাহ করে আসছি। এটিই আমাদের জীবিকা। তারা লালমনিরহাট চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য । ব্যবসায়ের লাইন্সেস রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে হাটবাজারে পাইকারি ভাবে বিক্রি করি। তারা উল্টো বিজিবির সদস্যদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ তুলেছে। শুকনো সুপারি পরিবহন ও বিপনন অবৈধ হলে আটক পিকাপ ও চালকে কোন আইনে ছেড়ে দিয়েছে। কেন তাদের কে সিজার লিস্ট দিয়ে সহায়তা করা হয়নি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সারা জীবনের সঞ্চিত পুঁজি হারিয়ে পড়েছে মহা বিপাকে। তারা ন্যায় পেতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা অভিযোগ তুলের তাদের আটক শুকনো সুপারি ছিল ২ হাজার ৭৯ কেজি। তারা ৩২৫ হতে ৩৬৪ টাকা দরে প্রতি কেজি শুকনো সুপারি সৈয়দপুরের আঁড়ত হতে কিনে নিয়ে এসে ছিল। তাদের চালান রশিদ আছে। এদিকে একটি সূত্র দাবি করে সাধারণত ভারত হতে মজা ও শুকনো সুপারি আসে। রংপুর ৫১ বিজিবির অধিনায়ক ফোনে জানান, আটক সুপারির ভারতে পাচার করতে নিয়ে এসেছিল। একতা বাজারের রাস্তায় আটক করা হয়। কাস্টমসে জমা দেয়া হয়েছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//আগস্ট ৩১,২০২২//