প্রতি শুক্রবার নিজ সংসদীয় এলাকা চট্টগ্রাম-১৩ আসন তথা কর্ণফুলী-আনোয়ারা উপজেলায় ছুটে এসে গ্রামের মানুষের সমস্যা সমাধানে নির্দেশ দেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি।
বিষয়টি দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে। এ সময় মন্ত্রী দুই উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে একেক সময় একেক মসজিদে নামাজ আদায় করে সরাসরি সাধারণ মানুষের কথা শোনেন। এলাকার দুঃখ দুর্দশা নিবারণে ওয়ান স্টপ সার্ভিসে সমাধান দিয়ে থাকেন।
সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দলীয় সূত্র বলছে, জনগণের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ নেই, তাদের আগামীতে নৌকা মনোনয়ন নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন হুঁশিয়ারির পর এলাকামুখী নন তিনি। কারণ এমপি থেকে প্রতিমন্ত্রী থাকাকালেও একই কায়দায় স্বভাবতই ভূমিমন্ত্রী প্রতি শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হলেই এলাকায় ছুটে চলে আসেন। এটা তাঁর দীর্ঘদিনের স্বভাব।
মন্ত্রী এসময় স্থানীয় নেতা ও জনগণের সঙ্গে উঠান বৈঠক, বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন, বিয়ে, স্কুল-কলেজের ক্রীড়া অনুষ্ঠান, নবীনবরণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানেও বক্তব্য রাখেন। এই বক্তব্য আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। কেননা, সুযোগ পেলেই তিনি চট্টগ্রামে চলে আসেন। খোঁজখবর নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। একই সঙ্গে আগামীতে এলাকার উন্নয়নে কি কি দরকার সে সব বাস্তবায়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
কেউ কেউ বলছেন, অনেক মন্ত্রী সময় ও সুযোগ পেলেই বিদেশে ছুটেন। আমাদের ভূমিমন্ত্রী সুযোগ পেলেই শহর থেকে গ্রামে চলে আসেন। ভূমিমন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে প্রশংসা করেছেন কর্ণফুলী আনোয়ারার লাখ লাখ নেটিজেনরা। আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ, বারশত, রায়পুর, বটতলী, বরুমচড়া, বারখাইন, আনোয়ারা, চাতরী, পরৈকোড়া, হাইলধর ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন এবং কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা, বড়উঠান, চরলক্ষ্যা, জুলধা ও চরপাথরঘাটার সাধারণ মানুষেরা বলছেন যোগ্য পিতার যোগ্য উত্তরসূরী।
মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক এমপি মন্ত্রী হবার পরে এলাকায় আসেন না। ব্যবসা কিংবা রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে নিজ নির্বাচনি এলাকার খোঁজখবর ঢাকায় বসেই নেন। সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি। তিনি সুযোগ পেলেই নিজ এলাকা কর্ণফুলী আনোয়ারায় ছুটে যান। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী বলেন,‘ আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক মাননীয় ভূমিমন্ত্রী তাঁর বাবার মতো মানবসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। ছুটি পেলেই দেরী না করে চলে আসে নিজ এলাকায়। উদ্দেশ্য দলকে সু-সংগঠিত করা এবং অসহায় মানুষের খোঁজ খবর নেওয়া এবং সাহায্য করা। কর্ণফুলী আনোয়ারার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নানা উন্নয়ন প্রচার ও সংগঠনকে চাঙ্গা এবং নেতা-কর্মিদের সাথে মতবিনিময় করাসহ সামাজিক নানা সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকেন তিনি। যা ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে বেশ।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব হায়দার আলী রনি বলেন, ‘সামনে নির্বাচন সে কারণে নয়। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় সব সময় আমাদের বলেন ‘আমাকে স্থানীয় জনগণ ভোট দিয়ে এমপি বানিয়ে সংসদে পাঠিয়েছে। আমি মন্ত্রী হয়েছি। জনগণের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা আছে। তাই যখনই সময় ও সুযোগ পান, তিনি চলে আসেন সাধারণ মানুষের মাঝে। পাশাপাশি নেতা-কর্মিদের মধ্যকার ভূল বোঝাবুঝি, মনমালিন্য, মতদ্বন্দ, মতভেদ নিরসন করে একই প্লটফর্মে দাড় করাতে সক্ষম হয়েছেন আমাদের অভিভাবক।’
বেশ কিছুদিন আগে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ চট্টগ্রাম আমার শহর, আমি এ শহরকে সম্মান করি। ঢাকার জন্য আমি মেহমান। আমি সময় পেলেই চট্টগ্রাম ছুটে আসি। চট্টগ্রামে নিঃশ্বাস নিতে না পারলে আমার কেমন জানি লাগে।’
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ/