Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 1:39 pm

সেই দুধের শিশু বিক্রির দালালকে বাঁচাতে আশ্রয়দাতারা মরিয়া

নেছারাবাদে দুর্ঘাকাঠিতে আঠার দিন বয়সি পরিমল দম্পত্তির দুধের শিশু বিক্রির খবর পত্রিকায় প্রকাশের পর গা ঢাকা দিয়েছে বিজন হালদার ও রনজিৎ মন্ডল। এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য জহর মিস্ত্রি এ খবর নিশ্চিত করেছেন। বিজন হালদার এলাকার একজন বড় প্রতারক হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন তার প্রতিবেশিরা। স্থানীয় একাধিক লোক বলেন, পত্রিকায় নিউজ প্রকাশের পর বিজনকে রক্ষার জন্য নড়ে চড়ে বসেছে তাকে আশ্রয় দেওয়া গ্রামের একাধিক সমালোচিত ব্যক্তিরা।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জহর মিস্ত্রী বলেন, বিজন আমার এলাকার লোক। সে স্কুল জীবন থেকেই এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের নেতা বনে যায়। সে সময়ে ইভটিজিং,মাদক জনিত ঘটনা ছিল তার অহরহ। কলেজ জীবনে পা রেখে জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় রাজনীতিতে। কিন্তু তার স্বভাব চরিত্র খারাপ বিধায় পদ পদবি পায়নি কোন দলে। এভাবে ধীরে ধীরে সে জড়িয়ে পড়ে মাদক,জমির দালালি ও নিসন্তান ঘরে সন্তান বিক্রির কাজে। বর্তামানে তার বাড়ীতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক কেনাবেচা। এ নিয়ে কেহ মুখ খুললে তাকে দেওয়া হয় তার পালিত গ্যাং দ্ধারা হুমকি ধামকি। আর বিজনের এ কাজে সর্বদা সহযোগীতা করে আসছে এলাকার ঔষধ ব্যবসায়ি হিসেবে পরিচিত রনজিৎ মন্ডল।

সমোদয়কাঠির ইউপি চেয়ারম্যান মো: হুমাউন বেপারি বলেন, বিজন এলাকার একজন বড় মাদক কারবারি। সে পারেনা এমন কোন কাজ নেই। জমির দালালি থেকে শুরু করে যেকোন খারাপ কাজ করতে সে দ্ধিধাবোধ করেনা। সে মাদক,শিশু সন্তান বিক্রি সহ এলাকায় বড় প্রতারক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সম্প্রতী সে তার সহচর এলাকার রনজিৎ মন্ডলকে সাথে নিয়ে অভাবি পরিমলকে ফুসলিয়ে শিশু সন্তানটি বিক্রিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। সেই সন্তান বিক্রির টাকার প্রায় সব টাকাই মেরে দিয়েছে বিজন ও রনজিৎ।

ছেলেকে বিক্রির পর এভাবেই ঘরের সামনে বসে থাকে তার মা

অভাবি পরিমলের এগার বছর বয়সি ছেলে পার্থ বলে, বিজন কাকা আমাদের বাসায় এসে জোড় করে আমার কোল থেকে বোনকে নিয়ে যায়। এসময় আমি বোনকে দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে অনেক মারধরের ভয় দেখায় বিজন কাকা।

বিক্রি হওয়া শিশু সন্তানটির পিতা অভাবি পরিমল বলেন, আমি গরীব মানুষ। আমার কোন ঘর বাড়ী জায়গা জমি নেই। পরের পরিত্যক্ত একটি ভাঙ্গা বাড়ীতে থাকি। আমার অভাবের কথা শুনে বিজন বলে, তোমার বাচ্চাটি দিয়ে দাও। ভাল থাকবে। বিনিময়ে তোমাকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দেব। বিজন আমাকে দশ হাজার টাকা দিয়ে আর কোন টাকা দেয়নি। আমি আমার সন্তান ফেরত চাই।

অভিযুক্ত বিজন হালদার বলেন, ভাই আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করে বেকার আছি। কাজ করতে গিয়ে আমি কারনে অকারনে ভিবিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ি। আমি রাজনীতি করি। এ জন্য একটু করলে অনেকে আমার রাজনীতির ক্যারিয়ার শেষ করার জন্য বাড়িয়ে মিথ্যা বলে।

প্রসঙ্গত, পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার দুর্ঘাকাঠিতে অভাবের তাড়নায় আঠার দিনের দুধের সন্তান বিক্রি করে দেয় অভাবি পরিমল দম্পত্তি। সন্তান বিক্রির মধ্যস্থাকারি বিজন এবং রনজিৎ বিক্রির প্রায় পুরো টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ খবর ২০ জানুয়ারি(বৃহস্পতিবার) একাধিক দৈনিক দেশতথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।