ছাব্বির হোসেন কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুমারখালীতে প্রায় ছয় বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে ত্রাণের সেতুটি। তবে দুপাড়ের সংযোগ সড়ক না থাকায় আজও ব্যবহার হয়নি সেতুটি। ফলে চর সাদিরপুর ইউনিয়নের প্রায় সাত হাজার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, উত্তর সাদিরপুর গ্রামের রহিম সরবদারের বাড়ির নিকট অবস্থিত এ সেতুটি ২০১৫ – ১৬ অর্থ বছরের গ্রামীন রাস্তায় ব্রিজ, কালভাট, নির্মান প্রকল্পের আওতায় ত্রাণের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা। সেসময় সেতু নির্মান কাজ উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া -০৪ আসনের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ। কিন্তু সেতু নির্মাণের ৬ বছর পার হলেও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাদিরপুর, উত্তর সাদিরপুর ও ঘোষপাড়া গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ৬ বছর আগেই সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আজও সড়ক হয়নি। বাধ্য হয়েই মানুষ সেতুর নিচে দিয়ে চলাচল করে। তবে বর্ষা মৌসুমে সেতুটি কোন কাজেই আসেনা। চলাচল করতে বর্ষায় নৌকা ব্যবহার করতে হয়। কোন বড় গাড়ি চলাচল করতে পারেনা। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনগণের।
ওই এলাকার কলেজ ছাত্র মিজান। সে পাবনা শহীদ বুলবুল কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করে। সে জানায়, সংযোগ সড়ক না থাকায় চলাফেরা করতে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়। জনস্বার্থের সেতুটি দীর্ঘদিন জনদুর্ভোগে পরিনত হয়ে আছে। কর্তৃপক্ষের খোঁজ নেই।
চর সাদিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আশিক বলেন, ইউনিয়নে একটি মাত্র বিদ্যালয়। এই সেতুর সড়ক দিয়েই চলাচল করি। শুষ্ক মৌসুমে ঠেলে ঠুলে চলাচল করলেও বর্ষায় বাড়ি থাকি। কৃষক রহমত আলী বলেন, ক্ষেতের ফসল গাড়ি ঘোড়ায় নেওয়া যায়না এই সড়কের জন্য। খুব কষ্ট আমাদের। দ্রুত সেতুর সড়ক নির্মাণের দাবি জানায়।
ওই এলাকার পান্নু প্রামাণিক জানান, তিনি একজন ভ্যান চালক। এই রাস্তা দিয়ে অনেক দিন যাবৎ যাতায়াত করি। সেতুর সড়ক না থাকায় আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টির সময় ৩ থেকে ৪ কিঃমিঃ পথ বেশি ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। রহিম সর্দার বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। জমি চাষাবাদ করি। জমির ক্ষেত উঠায়ে নিয়ে আসার জন্য গাড়ি ব্যবহার করি। কিন্তু এই রাস্তা না থাকায় অনেক ঘুরে ফসল নিয়ে আসতে হয়।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, যখন সেতু ছিলনা তখন বাঁশের সাকোঁ বানিয়ে বর্ষার পারাপার হতাম। অনেক ভোগান্তি হত। সেতুতেও ভোগান্তির শেষ নেই। তারা আরো জানান, আগামী বর্ষা আসার আগেই সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলে এলাকাবাসী উপকৃত হত।
চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সড়ক না থাকায় জনগণের অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। বারবার কর্তৃপক্ষে তাগিদ দিলেও সড়ক নির্মাণ হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমি যোগদানের পূর্বে ত্রাণের অর্থায়নে সড়ক ছাড়াই সেতুটি নির্মিত। আমি সরেজমিন গিয়েছি, সড়ক নির্মাণের চাহিদা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।

Discussion about this post