বাংলাদেশি রুমমেটের ছুরিকাঘাতে খুন হয় শাকিল মিয়া। মৃত্যুর দীর্ঘ ছয় মাস পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত শুক্রবার সকালে কফিনবন্দি মরদেহ আসে জামালপুরের নিজ বাড়িতে।
২০১৮ সালে সৌদি আরবে যায়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে খুন হন শাকিল মিয়া (২১)। গত শুক্রবার দুপুরে তার নিজ বাড়িতে মরদেহ দাফন করা হয়।
সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে শাকিল মিয়ার (২১) জন্ম সনদের বয়স বাড়িয়ে সুদের টাকায় সৌদি আরবে পাঠান সুবহান মিয়া (৬০)। স্বপ্ন ছিল অভাবের সংসারে আনবে স্বচ্ছলতা।
কিন্তু সেই স্বপ্ন আটকে গেল সৌদি থেকে আসা ছেলের লাশের কফিনে।
নিহতের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ছবিলাপুরের সুবাহান মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুবহান মিয়ার দুই ছেলে, এক মেয়ে ও বড় ছেলের স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। শাকিল মিয়ার
বাবা অসুস্থ তেমন কোন কাজ করতে পারে না। সংসারের অভাব ঘোচাতে সপ্তম শ্রেণি পড়া শেষ করে সুদের টাকা নিয়ে ২০১৮ সালে সৌদি আরবের যান।
নিহতের ভাই সাইদুর রহমান বলেন, সৌদি আরবের বুরইদের আল-কাশিমে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন শাকিল। শাকিলের সাথে একই রুমে থাকতেন আরও দুই বাংলাদেশি। হঠাৎ ২০২১ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিন খবর আসে শাকিল খুন হয়েছে। তারপর জানতে পারি রুমমেট দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুজনের মধ্যে একজন খুনি সৌদি আরবের জেলে আছেন।
তিনি আরো বলেন, এদিকে আমি বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে টাকা দেই দালালকে। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে নিজে ও বিদেশে যাওয়া বন্ধ করি। কিন্তু দালালের কাছে জমা দেওয়া টাকাও আর ফেরত দেইনি। এখন ঋণের বোঝা মাথায়, ভাইটি খুন হলো এ নিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
নিহত শাকিলের মা রোকেয়া বেগম জানান, আমার ছেলে অনেক ভালো ছিলো। তার সাথে কারোর কোন ঝগড়া ছিলোনা। মরার আগেও আমার সাথে কথা কইছে। আমার ছেলেকে কেন মারলো কিছুই জানি না। আমার ছেলেকে যে মারছে তার ফাঁসি চাই। আমার এই অভাবের সংসার কেমনে চলমু এক আল্লাহ জানে। আমার বড় ছেলে অটো চলায় তার টেকা দিয়েই কোনমতে বাইছে আছি। সরকার যদি আমাদের একটু সহযোগীতা করতো তাইলে হয়তো একটু চলতে পারতাম।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতের পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে সহযোগীতা করা হবে।

Discussion about this post