Print Date & Time : 12 May 2025 Monday 4:30 pm

স্ত্রীর পরোকিয়ার কারণেই প্রান দিতে হল জহুরুল ইসলামকে

দৌলতপুর প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পরোকিয়া আসক্ত স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন তাপু ও তার পরিবারের উপর্যুপরি নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে প্রান গেল কলেজ শিক্ষক জহুরুল ইসলামের। সরেজমিন তদন্তে জানা যায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা নুরুজ্জামান বিশ^াস ডিগ্রী কলেজের ভুগোল বিভাগের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের নারায়নপুর (আলমাতলা) গ্রামের মৃত পলান মন্ডলের ছেলে। পরবর্তীতে তারা স্বপরিবারে উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে (মাষ্টারপাড়ায়) বাড়ী করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। নূরুজ্জামান বিশ^াস ডিগ্রী কলেজে চাকুরীর সুবাদে প্রভাষক জহুরুল ইসলাম উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন (পশ্চিমে) চামনাই গ্রামে ৬শতক জমি ক্রয় করে ৪তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ১তলা বাড়ী নির্মান করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বেশ সুখেই দিনাতিপাত করছিলেন সদাহাস্যউজ্জল নূরুজ্জামান বিশ^াস ডিগ্রী কলেজের ভূগোল বিভাগের সকলের প্রিয় ও শিক্ষক বাতায়নের ডিজিটাল কন্টেন্ট নির্মাতা দেশসেরা শিক্ষক জহুরুল ইসলাম। কিন্তু তাদের সুখের সংসারে বাধ সাধে পরোকিয়া আসক্ত স্ত্রী মোছাঃ সাবিনা ইয়াসমিন তাপু। সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নেরর খাসমথুরাপুর গ্রামের জয়মদ্দিন সরদারের মেয়ে এই সাবিনা ওরফে তাপু। এই পরিবারটি ঐ এলাকার সবার কাছে নষ্টা পরিবার হিসাবেই পরিচিত। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, এই পরিবারের বড় মেয়ে শিরিন একটানা ১৯ বছর ঢাকায় জনৈক এক শিল্পপতির রক্ষিতা হিসাবে অনৈতিক কাজে লিপ্ত ছিলেন। আর শিরিনকে এই কাজে সরাসরি সহযোগিতা কওে সেই শিল্পপতির হাতে তুলে দেন তার বড়ভাই পলাশ সরদার। বিনিময়ে পরিবারের সকলে মিলে এই শিল্পপতির কাছ থেকে কামিয়েছেন ঢাকা শহরে ফ্লাট, ফ্লটসহ কোটি কোটি টাকা। এইবাড়ির আরেক মেয়ে শিউলী আক্তার উপজেলার আল্লারদর্গায় একটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতাকালীন সময়ে সহকর্মীর সাথেন পরোকিয়ার অভিযোগে বর্তমানে চাকরীচ্যুত। এই বাড়ির আরেক সন্তান রকেট সরদার একটি টোব্যাকো কোম্পানীর ম্যানেজার পদে চাকরী করাকালীন সময়ে কোটি কোটি টাকা চুরি ও কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ন তথ্য ফাঁসের অভিযোগে মালিকপক্ষ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং গনপিটুনি দিয়ে গুরুতর আহত করে চাকুরী থেকে বের করে দেন। আর এই পরিবারের বাবা জয়মদ্দিন সরদার অদ্যাবধি নিষিদ্ধঘোষিত বাংলা মদ ও স্প্রিট পানকরে সব সময় মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মথুরাপুর এলাকার একাধিক ব্যাক্তি অভিযোগে জানান, এই জয়মদ্দিন সরদারের পরিবারটি অত্র এলাকার মধ্যে একটা নোংরা পরির্বা এই পরিবারের অধিকাংশই পরোকিয়ায় জড়িত। এলাকার কিছু প্রভাবশালী নোংরা ও দালাল প্রকৃতির লোকজনের সাথে ঐ পরিবারের ঘনিষ্ঠতা থাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস পাইনা। তাছাড়া কেউকিছু বললে তারা নোংকামি করে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দিতে পাবে তাই তাদেও কেউ কিছু বলে না। কলেজ শিক্ষক জহুরুল মানুষ চিনতে ভূল করেছিল তাই এই ছলনাময়ী পরোকিয়া আসক্ত সাবিনার সাথে সম্পর্কের বাধনে আবদ্ধ হয়। জহুরুলের বিয়ের সময় পরিবারের আপত্তি থাকা সত্বেও সবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সাবিনাকে বিয়ে করেন জহুরুল ইসলাম। স্থায়ীভাবে আল্লারদর্গায় চামনাই বসবাস শুরু করেন। কোন কিছু জেনে বোঝার আগে বেশ সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু তাদের সুখের সংসারে বাধসাধে পরোকিয়া আসক্ত স্ত্রী সাবিনা। বিয়ের আগে থেকে সাবিনা তার ছোটবোনের স্বামী উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের মাহফুজুল হক ফজলু তহশিলদারের ছেলে মঞ্জুর কাদির (লাবু) মাষ্টার এর সাথে পরোকিয়া সম্পর্কে লিপ্ত ছিল। বিয়ের পরেও সাবিনা তার এ স্বভাব বদলাতে পারেনি। কলেজ শিক্ষক জহুরুল ইসলামের অপুপস্থিতিতে সাবিনা তার ভগ্নিপতি মঞ্জুর কাদির (লাবু) মাষ্টারকে ফোনে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে অনৈতিককাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় কয়েকবার জহুরুল ইসলাম তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরিস্থিতি টের পেয়ে লাবু মাষ্টার তাৎক্ষনিক সটকে পড়ে। এ সংবাদ পেয়ে আল্লারদর্গা বাজরের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ও মাহাবুল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। এরপর ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জহুরুল তার স্ত্রী সাবিনাকে ডিভোর্স থেকে দুরে থাকে। পরোকিয়া আসক্ত সুচতুর সাবিনা এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে প্রায়শ ছেলে মেয়ে নিয়ে মথুরাপুরস্থ তার বাবার বাড়ী চলে যেতেন। পরবর্তীতে নষ্টা পরিবারের বাবা-মা,ভাইবোনদের সাথে কু-পরামর্শ করে পারিবারিকভাবে ভূল স্বিকার করে হাতেপায়ে ধরে মাফ চেয়ে নিয়ে আবার সংসার শুরু করতেন। এরপর সুযোগ বুঝে সাবিনা তার বাবা-মা ও ভাইবোন ও ভগ্নিপতিদের কু পরামর্শে তার স্বামী জহুরুলকে তাদের বাড়ীটি সাবিনা ইয়াসমিনের নামে রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এবং দিনরাত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। আল্লারদর্গাস্থ বাড়ীটি সাবিনার নামে রেজিষ্ট্রি করে না দিলে কলেজ শিক্ষক জহুরুলকে তার ভাই পলাশ সরদার,রকেট সরদার ও কাজল সরদার সহ ভগ্নিপতি মঞ্জুর কাদির (লাবু) মাষ্টার ও মিন্টু অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ জহুরুলকে হত্যার হুমকি দেয়। এভাবেই বাড়তে থাকে তাদের দাম্পত্য কলহ কিন্তু জহুরুল মানসম্মানের ভয়ে সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার করতে থাকে। ঘটনার ৬ মাস পূর্বে প্রভাষক জহুরুল ইসলাম তার বাড়ীতে নির্মান শ্রমিক লাগায়। নির্মানকাজ চলাকালীন সময়ে একদিন প্রভাষক জহুরুল ইসলাম কলেজ থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়ীতে এসে রাজমিস্ত্রী মোঃ আহসান কে জহুরুলের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে। তাৎক্ষনাত রাজমিস্ত্রী আহসান নির্মানকাজ ফেলে পালিয়ে যায়। আহসান উপজেলার হাসানপুর গ্রামের নওয়াব আলীর ছেলে। খবর পেয়ে আল্লারদর্গার বুলবুল, মাহাবুল ও মোস্তাফিজুর রহমান সঞ্চয় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শুনে ও জানে। এ ঘটনায় জহুরুল ও তার স্ত্রী সাবিনার সাথে ঝগড়াবিবাদের একপর্যায়ে জহুরুলের স্ত্রী সাবিনা মোবাইল ফোনে তার ভাই-বোন ও পরোকিয়ার সাথে জড়িত ভগ্নিপতিদের কে ডেকে নিয়ে ছেলে-মেয়ে ও প্রয়োজনীয় মালামালসহ বাবার বাড়ী চলে যায়।

কিন্তু বাধ সাধে সেখানেও । প্রায় ৭ মাসের অধিক বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় এই পরোকিয়া আসক্ত সাবিনা ইয়াসমিন তাপু তার আরেক ছোট বোনের স্বামী ঘরজামাই মিন্টুর সাথে পরোকিয়ায় পড়িতে পড়ে এবং পরিবাবের বাবা-মা,অন্যান্য ভাই-বোন, ভগ্নিপতি ও আত্বীয় সজনদের কু-পরামর্শে জহুরুলের শশুর বাড়ির লোকজনসহ সাবিনা জহুরুলকে কখনও আল্লারদর্গায় তার বাড়িতে এসে স্বশরীরে আবার কখনওবা মোবাইল ফোনে বাড়ী রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য হুমকি অব্যাহত রাখে। এব্যাপারে নূরুজ্জামার বিশ^াস কলেজের অধ্যক্ষ এমদাদুল হক উপাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম, ক্রিয়া শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু প্রদর্শক কাওসার আলীসহ সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে নিয়ে জহুরুল ইসলামের বড়ভাই আমিরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে বারবার মিমাংশা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে সাবিনার ভাই পলাশ,রকেট ও কাজলকে নিয়ে জহুরুলের বড়ভাই আমিরুল ইসলাম নুরুজ্জামান বিশ^াস কলেজে মিমাংশায় বসলে সাবিনা ও তার ভাইয়েরা বাড়ি সাবিনার নামে রেজিষ্ট্রি করে না দিলে জহুরুলকে হত্যার হুমকি দেয়। বোন সাবিনার পরোকিয়া সম্পর্কে তার ভাই পলাশ জানান ঐসব কথা ধরতে হয়না। এরপর মোছাঃ সাবিনা ইয়াসমিন তাপুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ আগষ্ট/২০২১ শুক্রবার বাদ মাগরিব নুরুজ্জামান বিশ^াস ডিগ্রী কলেজের সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর আল্লারদর্গাস্থ তার দলীয় কার্যালয়ে সভাপতি বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরীর উপস্থিতিতে, অত্র কলেজের অধ্যক্ষ এমদাদুল হক উপাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম ও সিনিয়ির শিক্ষকবৃন্দ এবং সাবিনা তাপুর ভাই রকেট সরদার, কাজল সরদার ভগ্নিপতি মঞ্জুর কাদির (লাবু) মাষ্টার, ভগ্নিপতি মিন্টু ও জহুরুল ইসলামের বড়ভাই মোঃ আমিরুল ইসলাম সহ সালিশী বৈঠকের মাধ্যমে শান্তিতে ঘর-সংসার করার অনুরোধ জানিয়ে ১ মাস পরে বাড়ী রেজিষ্ট্রি করার বিষয়টি দেখা যাবে মর্মে মিমাংশা করে ঐ রাতেই সকলে মিলে তাদের বাড়ীতে তুলে দিয়ে আসেন। পরের দিন জহুরুল তার স্ত্রীকে নিয়ে মথুরাপুর তার শশুরবাড়ী গিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে বাড়িতে আসে। এবার বাদ সাধে সিসি ক্যামেরা। স্ত্রী সাবিনা ও ছেলে আরিফ শাহরিয়ার শাওন বাড়িতে এসেই বাড়িতে কেন সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে তা নিয়ে জহুরুল ইসলামকে অকথ্যভাষায় গালমন্দ ও শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন করে এবং বলে যে, তোর মতো স্বামী আমার দরকার নাই। তুই মরতে পারিসনা। তুই বিষ খেয়ে মর। মৃত্যুও আগে জহুরুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা ও তার সন্তান এবং শশুর পরিবারের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই জহুরুলকে আত্বহত্যার প্ররোচনা দিয়ে আসছিল। এসব কথাশুনে জহুরুল ইসলাম গত ৯ আগষ্ট বেলা ১০টা থেকে ২ ঘটিকার মধ্যে কোন এক সময় একটি সাদাকাগজে চিঠি লিখে নিজের পরিহিত টাওজারের পকেটে রেখে স্ত্রী সন্তান ও শশুর পরিবারের অমানুষিক নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেয়ে নিজের জীবনের ইতি টানেন। এব্যাপারে জহুরুল ইসলামের ভাই আহাদ আলী নয়ন জানান, জহুরুলের স্ত্রী সাবিনা, তার সন্তান আরিফ শাহরিয়ার শাওন ও জহুরুলের শশুর পরিবারের লোকজনের অত্যাচার ও প্ররোচনায় একটি ফুলের মত নিষ্পাপ প্রান অকালেই ঝরে গেল। আমি আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী সাবিনা ও আমার ভাইয়ের শশুর পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত বিচার চাই। উল্লেখ্য, গতকাল তার পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানতে পারেন যে, জহুরুল ইসলাম সুইসাইডে মারা গেছেন।