গোফরান পলাশ, কলাপাড়া: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গ্রামীন সড়ক উন্নয়ন কাজের নামে ২৫ বছরের পুরনো অন্তত: ৩০/৩৫টি তাল গাছ কেটে ফেললেন ইউপি চেয়ারম্যান। উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই সড়কের পার্শ্ববর্তী তাল গাছ সহ বনবিভাগের রেপনকৃত বিভিন্ন প্রজাতীর বেশ কিছু গাছের চারা কেটে ফেলা হয়। উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে গত ২/৩
দিন ধরে এ গাছ কাটার মহোৎসব চললেও ঝড় জ্বলোচ্ছাস থেকে গ্রাম রক্ষায় সবুজ দেয়াল বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি কেউ, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
জানা যায়, এলজিইডি’র জলবায়ু সহিষ্ণু গ্রামীন অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্থ মাটির সড়ক সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। এ সড়ক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে গিয়ে
সড়কের পার্শ্ববর্তী ২৫ বছরের পুরনো অন্তত: ৩০/৩৫টি তাল গাছ সহ বনবিভাগের রেপনকৃত বিভিন্ন প্রজাতীর বেশ কিছু গাছের চারা কেটে ফেলেন ইউপি চেয়ারম্যান। এতে মাটির সড়ক সংস্কার কাজ তরান্বিত হলেও পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকীর কবলে পড়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা।
নজিবপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার (৬০), আবদুল বারেক (৪৫) ও সোহাগ হাওলাদার (৩৫) বলেন, নজিবপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের বাড়ী থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তার পাশের জমি থেকে বেকু দিয়ে মাটি কেটে সড়ক সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। সরকারী জায়গা থেকে মাটি নেয়ার কথা থাকলেও ব্যক্তি মালিকানার জমি থেকে মাটি নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে জমি মালিকদের সাথেও সমন্বয় করা হয়নি।
এছাড়া সড়কের পাশের পুরনো বড় বড় সাইজের তাল গাছ বেকু মেশিন দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। সড়কের পাশে যারা এ তাল গাছ রোপন করেছেন তারা চেয়ারম্যানের ভয়ে মুখে কিছু না বললেও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।
বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ’শনিবার রাতে মহিপুর ইউনিয়নের সিরাজ মেম্বর সড়ক সংস্কার কাজ করতে বন বিভাগের সৃজিত গাছ কাটার অনুমতির জন্য একটি আবেদন করেছেন। উক্ত আবেদনের অনুমতি
প্রাপ্তির জন্য ডিএফও’র কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি সাপেক্ষে গাছ নিলাম
দিয়ে বিক্রীর টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দেয়ার পর গাছ কাটা যাবে। এর
ব্যত্যয় হলে বন আইনে মামলা দেয়া হবে।’
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ন বলেন, ’সড়ক সংস্কার কাজ করতে আমরা চেয়ারম্যানকে গাছ কাটতে বলিনি। তিনি যদি কোন গাছ কেটে থাকেন এ দায় তার।’
কলাপাড়া ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,’আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে সড়কের গাছ কাটার বিষয়ে বন ও পরিবেশ কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে বিক্রীর টাকা সরকারী
কোষাগারে জমা দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নাই।’
মহিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলু গাজী বলেন, ’এলজিইডি’র ১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্থ মাটির সড়ক সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করতে কুদ্দুস হাওলাদারের বাড়ীর সামনের ৫/৭টি তাল গাছ কাটতে হয়েছে। যা তার বাড়ীর মসজিদ রক্ষায় তার সাথে কথা বলে কাটা হয়েছে। গাছ কাটার অনুমতি প্রসঙ্গে তিনি
বলেন ওই গাছ ব্যক্তি পর্যায়ে লাগানো হয়েছে।’
দৈনিক দেশতথ্য//এসএইচ//