পরিবেশ বিধ্বংসী নিষিদ্ধ পালিথিনের পোষ্টারে ছেয়ে গেছে হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকা ও হাটবাজার।
নিষিদ্ধ পলিথিনে মোড়ানো নির্বাচনী পোষ্টার উড়ছে এখন প্রায় সর্বত্র। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর ১৮ ডিসেম্বর থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান প্রার্থীদের লেমিনেটেড পোস্টার ও ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাটহাজারী পৌরসদরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন প্রার্থীদের লেমিনেটিং করা অগণিত পোস্টার এবং ব্যানার হাট বাজারে টাঙানো রয়েছে। যা এক সময় পরিবেশের বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। বিশেষ করে হাট বাজার অলিগলি এবং রাস্তায় প্রার্থীর পলিথিনে লেমিনেটেড পোস্টার এবং ব্যানার ঝুলতে দেখা গেছে। তবে অনেক প্রার্থীর সমর্থকরা বলছেন, কুয়াশার কারণে পোস্টার ছিঁড়ে যেতে পারে এজন্য পলিথিনে মোড়ানো হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় পলিথিনে মোড়ানো (লেমিনেটেড) পোস্টার তৈরি ও ব্যবহারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তা মানছেন না অনেক প্রার্থীরা।
এদিকে বিভিন্ন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকগণ প্রতীক বরাদ্দের দিনে নির্বাচনের আচরণ বিধি উল্লেখ করে সকল প্রার্থীদের বলে দিয়েছিলেন , নির্বাচনী পোস্টারে পলিথিন মোড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। কোন অবস্থাতে পোষ্টারে পলিথিন মোড়ানো যাবেনা। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করবেন। আইনের ব্যাঘাত ঘটলে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিলো।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিলসহ পরিবেশ বিদরা বলেন, “পলিথিন বা প্লাস্টিক পঁচতে ৩০০-৪০০ বছর লেগে যায়। নির্বাচনী কার্যক্রমে যেভাবে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে পরিবেশতো ধ্বংস হচ্ছেই সাথে জলাবদ্ধতাও দেখা দিতে পারে। এছাড়া আদালতের নির্দেশনা রয়েছে পলিথিন ব্যবহার না করার। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনও পলিথিন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে। পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি এই পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার নিষেধ বা অপসারণে যথাযত কর্তৃপক্ষ একে বারেই নিরব। তারা এসব পোস্টার দ্রুত অপসারণ এবং এগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ধংসের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানান। একই সাথে এখন থেকে আর কেউ যেন পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার না টানায় সে ব্যাপারেও জরুরি নির্দেশনা জারিরও দাবি করেন তারা।
প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) সংসদীয় আসনে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রার্থীরা রাত দিন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই আসনে আটজন প্রার্থী থাকলেও ৪ প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা চলবে বলে ধারনা বিজ্ঞ মহলের।
এরা হলেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের সোনালী আঁশ (পাট) প্রতীকের প্রার্থী মো.নাজিম উদ্দীন প্রকাশ ভিপি নাজিম ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট সৈয়দ মোখতার আহমেদ সিদ্দিকী। বিপুল উৎসাহে শীত উপেক্ষা করে প্রার্থীদের প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে হাটহাজারীর ভোটের মাঠ। জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//

Discussion about this post