শতভাগ বিদ্যুতের দেশে এখনও চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বোনের লেখাপড়া করতে হচ্ছে কেরোসিনের বাতি জ্বালিয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ বিদ্যুৎবিহীন মাটির ঘরে আলীপুর স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নিহা আকতার এবং তার ছোটবোন ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেহেরুন নেছার বসবাস। তাদের বাবা, বাচা মিয়া একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মানুষ, যার উপার্জন বলতে হাটহাজারীর পশ্চিমের পাহাড় এবং উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে শাক লতা পাতা ইত্যাদি তুলে এনে ২০/৩০ টাকায় বিক্রি করা। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন চায়ের দোকানে পানিও সরবরাহ করেন ওই দুই শিক্ষার্থীর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বাবা।
নিহা ও নেছার মা জাহানারা বেগম অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করেন। বৃদ্ধ দাদিসহ ৫ জনের সংসারের দু বেলা খাবার জোগাড় করতে যেখানে নুন আনতে পানতা ফুরায় সেখানে তাদের দুই বোনের লেখাপড়া খরচ যোগাতে গিয়ে অনেক সময় না খেয়ে দিন কাটে পরিবারটির।তাদের নেই পুপেয় খাবার পানির ব্যবস্থা।পাশের বাড়ি থেকে ১০০ টাকার বিনিমিয়ে খাবার পানি কিনে পান করতে হয় এই অসহায় পরিবারটির। তাছাড়া বর্ষায় ভার করেছে তাদের কপালে নতুন চিন্তা।
শিক্ষার্থীদের মা জাহানারা বেগম বলেন, জরাজীর্ণ ঘরের চালের বেহাল দশায় বৃষ্টি হলে চাল দিয়ে পানি পড়ে। ঘরের মাটির দেয়ালগুলো ভাঙন ধরেছে। দরজার উপরের অংশের দেয়াল আগে একবার পড়ে গিয়েছে। যে কোন সময় দেয়াল ধ্বসে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকাও করছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আসলে পরিবারটি খুবই হত দরিদ্র। তাদের ঘরে দুইটা পয়সা আয় করার মতো কোনো সদস্য নেই। স্বামী থেকেও নেই, মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার নিদিষ্ট কোনো আয় নেই। ঘরে বৃদ্ধা মাসহ দুই মেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটে তাদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার নুর হোসেন বলেন, “বাচা মিয়ার পরিবারের বিষয়ে জানা ছিল না। সরকারের পক্ষ থেকে আবার যদি ঘর বরাদ্ধ আসে তবে তাদের নাম প্রথমে রাখবো।”
বিষয়টি সম্পর্কে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.শাহিদুল আলম জানান, “ভুক্তভোগীর কি কি অসুবিধা আছে , একটা আবেদন নিয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে সমস্যাগুলো জানালে সরকারী যে সমস্ত সাহায্যের খাত আছে, সেখান থেকে যথাসম্ভব সহযোগিতা দেওয়া যাবে। এছাড়া ঘরের টিনের চাউনি নষ্ট হলে টিনের ব্যবস্থাও করা হবে।”
আর//দৈনিক দেশতথ্য//৬ জুন-২০২২//

Discussion about this post