Print Date & Time : 12 July 2025 Saturday 11:43 am

হাটহাজারীতে রেল লাইনে উপর অবৈধ পশু হাট

হাটহাজারী পৌর সদরের রেলস্টেশন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবারে রেল লাইনের উপরেই বসানো হচ্ছে অবৈধ পশু হাট। আর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাতদিন চলছে সেই হাট। এতে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকির পাশাপাশি যেকোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই রেলপথের উপরেই সে বাজার বসছে বলে জানা গেছে। স্টেশন মাস্টারের আপত্তি সত্ত্বেও বাজার ইজারাদার নিয়মিত হাট পরিচালনা করে যাচ্ছেন দাপটের সাথে।

বৃহস্পতিবার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসদরের হাটহাজারী স্টেশনের রেললাইনের উপরই বসছে পশুর হাট। রেললাইনের উপর অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। বিক্রেতারা সিগন্যাল, রেলের স্লিপার বা পয়েন্টের চাবির সঙ্গে গরু বেঁধে রেখেছেন বিক্রি করার জন্য। অনেকে গরু, ছাগল নিয়ে রেললাইনের ওপরেই বসে আছেন। আর ট্রেন এলে শুরু করেন ছুটোছুটি। এতে করে যেকোন মুহূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার শংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন এতে করে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

সুত্রে জানা যায়, হাটহাজারী স্টেশন এলাকায় প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন ও বাজার কমিটির সমন্বয়ে গরু বেচাকেনার জন্য গরুর হাট পরিচালিত হয়। স্টেশন এলাকার বাউন্ডারি ও সীমানা প্রাচীর না থাকায় বাজারে ক্রয় বিক্রয় করার জন্য নিয়ে আসা গরু রেল লাইনের উপর অবস্থান করে। রেল লাইনে গরুর হাট বসার জন্য রেল লাইনে দেওয়া পাথর সমূহ রেল লাইন হতে সরে যাচ্ছে এবং ট্রেন চলাচলের ঝুঁকি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেল পথের নিরাপত্তার স্বার্থে গরুর হাট না বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিভাগীয় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রকৌশলী/২ কে জানানো হয়েছে।

এই হাটে গরু বিক্রেতা ও ক্রেতারা বলেন, রেললাইনের উপর পশুর হাট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ইজারাদার ও পশুর হাট আয়োজকরা এখানে স্থান দিয়েছেন, ঝুঁকি জেনেও কেউ কিছু বলছেন না।এখান থেকে গরু বেচাকেনা সরিয়ে দেওয়া উচিত বলেও জানান তারা।

গরু কিনতে উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়ন থেকে এ হাটে আসা সুয়েব আহমদ মিটু নামের এক প্রবাসী বলেন, ‘বাজারে এসেই দেখলাম রেললাইনের পাশে এবং রেল লাইনের ওপরেও পশু বেধে রেখেছেন বিক্রেতারা। এসেই যখন পড়েছি তাই ঝুঁকি নিয়েই ঘুরে দেখছি। তবে এটা খুবই ঝুঁকিপুর্ণ।প্রশাসন বা রেল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে এখানে এমন ঝুঁকিপুর্ন পশুর হাট হতো না বলেও দাবি তার।

অভিযোগের বিষয়ে পৌরসভার হাটহাজারী বাজার ইজারাদার আবদুল মাবুদ

আইয়ুবের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি পরে কথা বলবেন বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, এখানে গরুর বাজার না করার জন্য বার বার নিষেধ করেছি। তাছাড়া রেলওয়ে এলাকায় সব সময় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তারপরও গরুর বাজার বসানো হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. শাহিদুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, গরুর বাজারটি বছরের পর বছর ধরে রেলপথের উপর বসে আসছে। এছাড়া পৌরসভা বাজারটি থেকে বড় অংকের একটি রাজস্ব পাচ্ছে। হঠাৎ করে বাজারটি অন্যত্র সরানো যাবে না। তবে ঝুঁকিমুক্তভাবে যাতে রেল চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

এবি//দৈনিক দেশতথ্য//জুন ২৩,২০২৩//