মো.আলাউদ্দীন, হাটহাজারীঃ হাটহাজারী উপজেলার ৯নং ওয়ার্ডস্থ আজিজিয়া মজিদিয়া সড়কের বেশ কয়েকটি অংশের বেহাল দশার কারনে জনদূর্ভোগ এখন চরম আকার ধারন করেছে।
জানা গেছে, পৌর সদর বাস স্ট্যান্ড থেকে সড়কটি ব্যবহার করে রমেশ মহাজন সড়ক ধরে সুবেদার পুকুর পাড় হয়ে চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক মহাসড়কে উঠা যায়। এছাড়া এশিয়ার অন্যতম মৎস্য ক্ষেত্র হালদা নদী, নদী পাড়ের গড়দুয়ারা মাদার্শা ইউপিসহ ফতেয়াবাদ হয়ে চট্টগ্রাম হাটহাজারী সড়ক এবং মাদার্শা মাদারিপুল ধরে নজুমিয়াহাট হয়ে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কে উঠা যায়।যার কারনে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র -ছাত্রী ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবি পুরুষ মহিলা যাতায়াত করে। বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আনাচে কানাচে সড়কের উন্নয়ন কাজ হলেও এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে তেমন কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বললেই চলে। সড়কটির বেশিরভাগ অংশেই কোনো পাশে পরিকল্পিত কোনো নালা নেই, বিশেষ করে পশ্চিম মেখল ৯ নং ওয়াডস্থ তালুকদার বাড়ীর অংশ থেকে শুরু করে সড়কের পাশে নালা চোঁখে পড়েনি। যার কারনে সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার ফকিরহাট বাজারের পূর্ব পাশে তালুকদার বাড়ী ও সৈয়দ বাড়ী সংলগ্ন এবং বড় পীর পাড়া প্রকাশ লেঙ্গার দোকানের পশ্চিমে মুন্সি বাড়ি ঘাটার পূর্ব পাশে সড়কের অংশে পানি জমে পুকুরে পরিণত হয় সড়কটি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন এলাকায় সড়কের উন্নয়ন হলেও এ সড়কের সেরকম কোনো উন্নয়নই হয়নি। তারা জানিয়েছে, রীতি অনুযায়ী ইউপিসহ নানান কর আদায়ে কার্পণ্য না করলেও সড়ক উন্নয়ন করার কোন গরজই মনে করছেনা সংশ্লিষ্টরা। যেনো দেখার কেউ নেই।
তারা আক্ষেপ করে বলেন, এলাকার যথাযথ উন্নয়ন না হলে বিভিন্ন টেক্স পরিশোধ করে লাভটা কি? এ ব্যাপারে এলাকাবাসী সড়কটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় সাংসদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাঈম জানান, যখন সড়কের সংস্কার কাজ হয় তখন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত মানসম্মত উপাদান ব্যবহার না করাতে খুব দ্রুতই সড়ক নস্ট হয়ে যায়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন এবং রাস্তার পাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থারও সংস্থার করা খুব জরুরী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দেওন নগর ও মেখল আজিজিয়া মজিদিয়া সিএনজি ফোর স্ট্রোক, চালক সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ আবদুল মালেক সুমন জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কথা কি আর বলবো, খুব কষ্টে আছি এ সড়ক নিয়ে। এরকম রাস্তায় গাড়ি চালালে গাড়ির আয়ু অর্ধেকে নেমে আসবে এটাই স্বাভাবিক। যা আয় করি তা সড়কের কারনে তৈরী হওয়া গাড়ির কাজেই চলে যায়। সংসার চলবে কি করে !
আরেক চালক আবদুল মান্নান মিন্টু বলেন, সড়কটির কিছু কিছু অংশ এমন খানা খন্দে ভরা যে, কোনো ডেলিভারি রোগী গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে গাড়িতেই ডেলিভারি হয়ে যাবে এমন অবস্থা। আমরা দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দীন জানান, আমরা ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সড়কটির সংস্কার কাজ করার জন্য ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে ৮নং মেখল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.সালাউদ্দীন চৌধুরী বলেন, সড়কটির বেহাল দশার কথা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সাংসদ বিরুধী দলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে জানান, সড়কটির ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান সোমবার বিকালের দিকে জানান, এ সড়কের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
দৈনিক দেশতথ্য//এইচ//