জামালপুরের সরিষাবাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক ভিক্ষুক পরিবারকে হাসপাতাল থেকে আটক করে টেনেহিঁচড়ে আদালতে সোপর্দ করায় চার এসআইকে বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের চার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বরখাস্তকৃতরা হলেন এসআই মুনতাজ আলী, সরিষাবাড়ী থানার এসআই সাইফুল ইসলাম, এসআই ওয়াজেদ আলী ও আলতাব হোসেন। তারা ভিক্ষুক পরিবারের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
প্রত্যাহার হওয়া দুই পুলিশ সদস্য হলেন মোজাম্মেল হক ও সাথী আক্তার।
বুধবার (১১ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি ভিক্ষুক পরিবারের পক্ষেও মামলা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসিবাজার এলাকার ভিক্ষুক আব্দুল জলিল (৬৪) ২০ শতক জমিতে বসতভিটা বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। সম্প্রতি ওই জমি নিজেদের বলে দাবি করেন একই এলাকার মুজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। এ নিয়ে মামলা হলে আব্দুল জলিলের পক্ষে ডিক্রি দেন আদালত।
আদালতের আদেশ অমান্য করে সোমবার সকালে ভিক্ষুক আব্দুল জলিলের পরিবারের ওপর দেশীয় অস্ত্র রামদা, লোহার রড ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালান মুজিবুর রহমান ও তার সঙ্গীরা। হামলায় আব্দুল জলিলসহ পরিবারের সবাই আহত হন।
গুরুতর আহত আহত আব্দুল জলিল (৬৪), তার স্ত্রী লাইলী বেগম (৫০), বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), মেঝো ছেলে ওয়ায়েজ করোনি (২৫), ছোট ছেলে হামদাদুল হককে (১৬) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবারের অন্য সদস্য জসিম মিয়াকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর উল্টো মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে আটক করে পুলিশ।
হাসপাতালের শয্যা থেকে পুলিশ তাদের নামিয়ে হাত-মুখ চেপে ধরে টেনেহিঁচড়ে দ্বিতীয় তলা থেকে নিচ তলায় নিয়ে যায়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাখানেক তাদের থানাহাজতে রাখার পর বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক বলেন, সোমবার রাতে মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে আব্দুল জলিলসহ অন্যদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামিদের আটক করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ রাজবংশী জানান, আহতদের চিকিৎসা চলছিল। হাসপাতাল থেকে রোগীদের ছাড়পত্র নিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ।
রিমন//দৈনিক দেশতথ্য//১১ মে-২০২২

Discussion about this post