রোমান আআহমেদ, জামালপুর : ১০ মাস ধরে বেতন বন্ধ। চলতি মাসেও বেতন হইনাই। ঈদের চিন্তা মাথায়। বাপ হয়ে সন্তানের ঈদের বায়না মেটাতে পারি না। নতুন কাপড় কিনে দিতে সন্তানদের কান্না সইতে না পেরে বোবা হয়ে আছি।
ধারদেনা করে পেটের ভাত যোগাতেই হিমশিম খেয়ে পড়েছি। স্ত্রী সন্তানের ঈদের বাইনা মেটামো কিভাবে। সন্তান স্ত্রীর মুখে হাঁসি ফোটাতে নতুন কাপড়চোপড় কিনে দিবো সেই যো নেই। কি করবো চিন্তায় আছি। আমাদের কথা ভাবে না কতৃপক্ষ। বিভিন্ন রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান হিসেবে দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলে এসব জানা যায়।
সড়ক পথে রেলক্রসিংয়ে যানবহন ও যাত্রী পারাপার নির্বিঘ্ন রাখতে বুকে কষ্ট নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে গেট ব্যারিয়ারে কর্মরত গেটম্যানরা।
জামালপুরে রেলওয়ের রাজস্ব খাতে(TLR) প্রকল্পের আওতায় রেল ক্রসিংয়ের গেট ব্যরিয়ারে গেটম্যান নিয়োগ পেয়েছেন ১৫ হাজার টাকা মাসিক বেতনে। রেলক্রসিংয়ে গেট ব্যারিয়ার ফেলে সড়ক চলচলরত যানবহন ও পথচারী পারাপার নির্বিঘ্ন রাখতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এই গেটম্যানরা। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে দায়িত্ব পালন করলেও জুলাইয়ের ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বেতন ভাতা পাননি তারা। ১০ মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন ঝাপন করলেও প্রকল্পের অধীনে চাকরি করায় এ বিষয়ে তাঁরা প্রতিবাদও করতে পারেন না।
কথা হয় একাধিক গেটম্যানের সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ‘কী কারণে বেতন পেলাম না তা জানি না। আশায় ছিলাম ঈদের আগে বেতন পাব, বউ পোলাপান নিয়ে আনন্দে ঈদ করব, কিন্তু তা আর হলো না।’
জামালপুর-সরিষাবাড়ি রেলপথে দামেস্বর রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেইটম্যান মোস্তাক আহমেদ জানান, অভাবের সংসারে টেনেটুনে কোনমতে চলছে। কিন্তু নিজে কষ্টে কাটালেও অবুঝ সন্তানরা বুঝবে নাতো আমার অবস্থা। ঈদের বায়না ধরে কান্নাকাটি করছে। কি করবো এক আল্লাহ জানে ।
জামালপুর-শেরপুর বাইপাস রেলক্রসিংয়ে দায়িত্বরত সোহাগ মিয়া জানান, আমরা ১০মাস ধরে বেতন পাইনা।আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। ঈদের বাজার কেমনে করবো বউ বাচ্চাদের নতুন কাপড় কিনবো কেমনে। ধারদেনা করে কনমতে চলতাছি। কি করবো চোখে অন্ধকার দেখতাছি।
সবাই যখন আনন্দ উল্লাসে ঈদ উদযাপন করবে তখন রেলওয়ের গেটম্যানদের ঘরে ঘরে কান্নার রোলে চোখের জ্বলে কাটবে ঈদের দিন।
উর্ধতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) আবু সাঈদ হাসান বলেন, বাজেট হয়ে গেছে। ঈদের পর গেইটম্যানরা বেতন পাবেন বলে আশারবানী শুনালেন এই কর্মকর্তা।

Discussion about this post