আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া। যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনের স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে একযোগে হামলা শুরু করে রুশ বাহিনী। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়ালে এখনও বড় কোনো শহর দখল করতে পারেনি পুতিন বাহিনী। এর মধ্যেই ইউক্রেনের সেনারা দাবি করেছেন, ৯ মে’র মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে চায় রাশিয়া।
ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, যে করে হোক, ৯ মে’র মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে মস্কোর পক্ষ থেকে রুশ সেনাদের বলা হয়েছে।
কিয়েভ ইনিডপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৯ মে’র মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয়ের পর ১৯৪৫ সালের ৯ মে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্তালিন। দিনটিকে রাশিয়া এখনও উৎসব হিসেবে পালন করে। সে কারণেই ইউক্রেনের সেনারা মনে করছেন, পুতিনও আগামী ৯ মে ইউক্রেনে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০০৮ সাল থেকে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তবে সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা এবং রাশিয়ার ১৬ হাজার ৪০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের ১ হাজার ৩৫১ সেনা নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনের এক হাজার ৮০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সূত্র : কিয়েভ ইনিডপেনডেন্ট
দৈনিক দেশতথ্য//এল//