দেশের কল্যাণে বসুন্ধরা, মানুষের কল্যাণে বসুন্ধরা। অসহায় মানুষদের সহযোগীতার অংশ হিসেবে এবার বসুন্ধরা গ্রুফ চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ছাইল্যেছোর রিজার্ভ পাড়ার বাসিন্দা মানু মারমাকে সেলাই মেশিন দিয়েছে। মানু মারমার স্বামী অংচাক্রই মারমা দিনমজুর।কখনো কাজ পান আবার কখনো কাজের অভাবে থাকতে হয় না খেয়ে। এই দম্পতির তিন সন্তান।
তাঁদের স্বপ্ন মানুষ হবে এই সন্তানগুলো। কিন্তু যেখানে পেট চালানোই দায়, সেখানে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়। আস্তে আস্তে এই পরিবারের সব স্বপ্ন যখন ফিকে হয়ে যেতে লাগল, তখনই এই পরিবারের স্বপ্নপূরণের সারথি হলো বসুন্ধরা গ্রুপ।
মানু মারমার মতো একই উপজেলার আরো চার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্প পরিবার। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এবং শুভসংঘের উদ্যোগে এই পাঁচ পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় সেলাই মেশিন। সম্প্রতি ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের জহুরুল হক হল মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেলাই মেশিনগুলো হস্তান্তর করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র আলহাজ ইসমাইল হোসেন। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের পরিচালক ও কালের কণ্ঠের সিনিয়র সহসম্পাদক জাকারিয়া জামান। সভাপতিত্ব করেন ফটিকছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র বলেন, ‘দেশের স্বনামধন্য শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরার এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, সেই সঙ্গে এমন মহৎ কাজের সঙ্গে যাঁরা শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।
বসুন্ধরার সেলাই মেশিন মল্লিকা দেবীকে দিয়েছে বেঁচে থাকার একটা অবলম্বন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মলিয়াইশ গ্রামের সালমা আক্তার। স্বামী তাজুল ইসলাম চালাতেন অটোরিকশা। কয়েক মাস আগেও স্বামীর রোজগারের টাকায় কোনোমতে চলছিল সংসার আর দুই ছেলের পড়াশোনা। কিন্তু সাত মাস আগে সালমার স্বামী মারা যান লিভার ক্যান্সারে। স্বামী তাজুল ইসলামকে হারিয়ে ছোট্ট দুটি সন্তান নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছিলেন সালমা আক্তার। সন্তানদের পড়াশোনা আর দুই বেলা খাবারের সন্ধানে ছুটেছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। না খেয়ে কত দিন থাকতে হয়েছে তার হিসাব নেই। সেলাইলের কাজটি শিখে রেখেছিলেন সালমা। কিন্তু সেলাই মেশিন কেনার সামর্থ্য ছিল না তাঁর। এবার সালমার পাশে এসে দাঁড়াল বসুন্ধরা গ্রুপ। সালমা আক্তারকে স্বাবলম্বী করতে বসুন্ধরার অর্থায়নে এবং কালের কণ্ঠ শুভসংঘের উদ্যোগে একটি সেলাই মেশিন ও পোশাক তৈরির উপকরণ দেওয়া হয়েছে।
অতিদরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা দুর করতে ওই সব শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে পাশে দাঁড়ায় দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ। কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের ডেলপাড়া গ্রামের মেধাবী দুই শিক্ষার্থী সাদিয়া ও রাফিয়া। মেধাবী শিক্ষার্থী হলেও তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে দুই পরিবার। সেই পরিবার দুটির পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বৃহত্তম সামাজিক সংগঠন শুভসংঘের বন্ধুদের মাধ্যমে খুঁজে বের করে সাদিয়া ও রাফিয়াকে দেওয়া হয়েছে দুটি সেলাই মেশিন। গত ২ মার্চ বুধবার একটি সেলাই মেশিন ও কিছু নতুন জামাকাপড় বানানোর মতো সব উপকরণ বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে শুভসংঘের বন্ধুদের মাধ্যমে।
শুধু সাদিয়াই নয়, একই দিনে আরেক মেধাবী শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানার পড়াশোনা নিশ্চিন্তে চালিয়ে নিতে তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নতুন সেলাই মেশিন ও কাপড়চোপড়।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//ফেব্রুয়ারী ৫, ২০২২//

Discussion about this post