রাতারাতি ধনী হয়ে উঠছেন অখ্যাত ভাঙ্গারি ব্যবসায়ি রুবেল
নেছারাবাদে এমভি ওয়াক তারিব (মেরিন নং ২৫১১৭) নামের একটি চোরাই কার্গো জাহাজ কেটে লোহা বিক্রি করা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। মাগুরা গ্রামের অরবিট ডক ইয়ার্ডের পাশ থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় জাহাজের মালিক পক্ষ এটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মালিক পক্ষের উপস্থিতি টের পেয়ে চোর চক্রের হোতা যশোরের নওয়াপাড়া এলাকার মাস্টার ইমরান হোসাইন ও তার সহযোগি মাস্টার মেহেদী হাসান পালিয়ে যায়। তবে দাপটের সাথে আছে চোরাই জাহাজের লোহা লক্করের ক্রেতা ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া।
এ ঘটনায় জাহাজের মালিক আশিকুর রহমান ও সরোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ২২ মার্চ রাতে নেছারাবাদ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্তরা হল যশোরের নওয়াপাড়া বন্দরের হাবিবুর রহমানের পুত্র মাস্টার ইমরানসহ মোট চার জন।
উদ্ধার হওয়াএমভি ওয়াক তারিব জাহাজের মালিক ঢাকার দোহার উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের অশিকুর রহমান জানান, তাদের জাহাজটি যশোরের নওয়াপাড়া বন্দরের মেসার্স সায়েদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মাস্টার ইমরান হোসাইন ভাড়ায় নিয়ে চালাচ্ছিলেন। ৭ মাস আগে থেকে জাহাজ ভাড়ায় নেয়ার পরে গত তিন মাস ভাড়া পরিশোধ করেননি। এ সময় একটি ভুয়া চেক দিয়ে ভাড়ার টাকা পরিশোধে টালবাহানা করতে থাকেন।
গত ২০ মার্চ নেছারাবাদ উপজেলার নৌযান শ্রমিক নেতা জাকির হোসেনের কাছ থেকে একটি জাহাজ কেটে বিক্রি করার খবর পান। খবর পেয়ে জাহাজের অংশীদার সরোয়ার হোসেনকে নিয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসে নিজেদের জাহাজ শনাক্ত করেন।
ইতোমধ্যে চোরেরা ওই জাহাজের ভিতরের অনেক লোহা লক্কর ওয়েল্ডিং মেশিন দিয়ে কেটে সরিয়ে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। তবে জাহাজ মালিকদের অভিযোগ তারা (আমরা) জাহাজের প্রকৃত মালিকানার কাগজ দেখালেও প্রশাসন তাদের তেমন কোন সহযোগীতা করছেনা। অথচ, চোরেরা জাহাজটি নিজেদের বলে দাবি করে এখনো তারা কোন কাগজ দেখাতে পারছেন না।
চোরাই লোহা লক্করের ক্রেতা ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, জাহাজের মালিক পরিচয় দিয়ে মাস্টার ইমরান হোসেন প্রতি কেজি লোহা ৫২ টাকা দরে বিক্রি করার জন্য তার সাথে স্ট্যাম্পে চুক্তি করেছেন। এ বিষয় মাস্টার ইমরানের সাথে কথা বললে তিনি নিজেও ওই জাহাজের মালিক বলে দাবী করেন। তবে ইমরান জাহাজটি নিজের দাবি করলেও প্রকৃত কোন কাগজপত্র না দেখাতে পেরে নানা টালবাহানা করছেন।
উদ্ধার হওয়া জাহাজের বিষয় নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমভি ওয়াক তারিব এম-২৫১১৭ এর মালিক দাবীদার দোহারের সরোয়ার হোসেন ও আশিকুর রহমানের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
তারা জাহাজের রেজিষ্ট্রেশনসহ কাগজপত্র দাখিল করেছেন। অপরপক্ষ নওয়াপাড়ার ইমরান হোসেনকেও কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলেছি। তিনিও কাগজপত্র আনতে গেছেন। জাহাজ আপাতত যেখানে যে অবস্থায় আছে সে ভাবে থাকবে। কাগজপত্র যাচাই করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Discussion about this post