স্টাফ রিপোর্টার:
রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেললেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য সফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ দাবি করেন।
মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সামরিক সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এর ফলাফল কী হবে তা নির্ভর করবে এ যুদ্ধ এবং এর ফলে উদ্ভূত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এ সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেললেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনে শুরু হওয়া রাশিয়ার সামরিক অভিযান, পাশাপাশি রাশিয়া ও তার মিত্র দেশ বেলারুশের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এই সংকটে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। সংকটের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।
তিনি বলেন, চলমান সংকট ও নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, সার, গম, নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রনিক পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিনিশ গুডসের মূল্য আবশ্যিকভাবে বাড়তে পারে। তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির ফলে খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়ে দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হতে পারে।
এই সংকটের ফলে রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির অর্থ পরিশোধ নিয়েও জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে মন্ত্রী জানান।
ঢাকা-১৮ আসনের মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি হিসাবে দুই হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে বর্তমান ও আগের চুক্তি থেকে দুই হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় হয়েছে।
নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বিগত এক দশকে বাংলাদেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাসের কারণে তা কমে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে। তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। বরং মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post