সোহাগ মাহমুদ, কুমারখালী(কুষ্টিয়া) : আখের রসের পরিবর্তে চিনি, ডালডা, ফিটকারি, বিল্ডিং রঙের চুনসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে বড় বড় টিনের কড়াইয়ে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে টন টন ভেজাল গুড়ের পাটালি। যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন ধরে কারখানা করে ভেজাল গুড়ের ব্যবসা করে আসছেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার মোড়াগাছা গ্রামের লিয়াকত উদ্দিনের ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম।
এমন সংবাদ পেয়ে শুক্রবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা খোকসা ইউনিয়নের মোড়াগাছা সেলিমের ভাটা এলাকার ভেজাল গুড় তৈরির কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইসাহক আলী।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত কারখানা মালিক শরিফুল ইসলামকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪১ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এ ভেজাল গুড় ও গুড় তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত ভেজাল গুড় ও গুড় তৈরির সরঞ্জাম ধ্বংস করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে ভেজাল গুড় তৈরির এ চক্র প্রতিবছরই ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় স্থাপন করে গুড় তৈরি করে। পরবর্তীতে সেই গুড় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করা হয়। গতবছরও এমন অভিযোগে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালোনা করে প্রশাসন।
এদিকে এমন ঘটনায় এলাকাবাসি বলছে, প্রতি বছর পুলিশ আসে আবার কিছুদিন পর ঠিকই চালু করে। নাম না প্রকাশ করায় স্থানীয় কয়েকজন জানায়, প্রতিবছর তারা বিভিন্ন স্থানে এমন কাজ করে আসছে।
অভিযোগ আছে, নামমাত্র ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা নিয়েও আর প্রশ্ন উঠেছে উপজেলা প্রসাশনেরে নাকের ডগায় কিভাবে এতো বড় কারখানা পরিচালনা করে। আর তাই তাদের দাবি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এসকল কারখানা স্থায়ী ভাবে বন্ধ করা হোক।
খোকাস উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সোহেল রানার সাথে কথা হলে তিনি জানান, যে সকল উপকরন দিয়ে এই ভেড়াজ গুড় তৈরি করা হচ্ছে এসব কেমিক্যাল মানব দেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এর ফলে লিবারে জটিল রোগ, বদহজম, ক্যান্সার এমনি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইসাহক আলী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা খবর পায় এই কারখায় চিনি, ডালডা, ফিটকারি, বিল্ডিং রঙের চুনসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করা হচ্ছে। এমন খবরে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কারখানা মালিককে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪১ ধারায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এসময় ভেজাল গুড় ও গুড় তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত ভেজাল গুড় ও গুড় তৈরির সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে, এবং এই অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

Discussion about this post