শেখ নাদীর শাহ্, পাইকগাছা(খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছায় বিকাশে (মোবাইল ব্যাংকিং) প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটকৃতরা বিকাশে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতানোর দায় স্বীকার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এরআগে প্রতারণার স্বীকার পৌরসভার সরল এলাকার বাসিন্দা মিল্টন শিকদার পাইকগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং-১০।
পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ মার্চ পাইকগাছা পৌরসভাস্থ আকবর স্টোর নামের বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে ভুক্তবোগী মিল্টন তার মেয়ে জোহরার কাছে ২৪ হাজার ৪শ ৯৩ টাকা পাঠায়। এ সময় প্রতারক চক্রের সদস্য ইউসুফ ওই দোকান থেকে সুকৌশলে গ্রাহকের মোবাইল নং অন্য সহযোগী মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠায়। এরপর সে গ্রাহক জোহরার ব্যবহৃত মোবাইল সিম নাম্বারে কল করে বলেন, তার বিকাশ নম্বরে সমস্যা আছে, ঠিক করার জন্য দ্রুত পিন নম্বর দিতে হবে। এর পর নানান কথায় সুকৌশলে জোহরাকে ব্যস্ত রেখে কথা বলতে-বলতে তার পিন নাম্বার কালেক্ট করে ওই সিমের বিকাশ এ্যাকাউন্টে থাকা টাকা তাদের মোবাইল নম্বরে ট্রান্সফার করে নেয়। এঘটনায় জড়িত আসামি ইউসুফ আলী (২২) দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ ইমরান হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি ইউসুফ মাগুরার শ্রীপুরের বরিশাট গ্রামের ইস্কেন্দার শেখের ছেলে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল উপজেলা খাদ্যগুদাম সংলগ্ন আকবর স্টোর নামক বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, সে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন বিকাশ এজেন্টের দোকানে গিয়ে কৌশলে টাকা লেন-দেনের ছবি মোবাইলে তুলে মাগুরার শ্রীপুরের বরিশাট এলাকার প্রতারক চক্রের সদস্য মোহাম্মদ শেখ( ২৫), শোয়েব শেখ (২৫), ইমরান শেখ (২৮) সহ অন্যদের কাছে পাঠাতো। এরপর প্রতারক চক্রের গডফাদাররা দোকান মালিক সেজে গ্রাহকের মোবাইল নাম্বারের বিকাশ এ্যাকাউন্টে সমস্যা আছে বলে ফোন দিত। এভাবে প্রতারক চক্রের অন্য সদস্য গ্রাহককে মোবাইলে ব্যস্ত রাখার সুযোগে কৌশলে তার পিন নং নিয়ে মুহুর্তেই সব টাকা তাদের নাম্বারে নিয়ে নিত।
এ মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ইউসুফ সহ মোহাম্মদ আলী ও শোয়েব শেখকে গ্রেফতার করেছে।
এব্যাপারে পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ধৃৃত আসামিরা প্রতারনার ব্যাপারে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে। এ প্রতারক চক্রের সাথে স্থানীয় বা দেশের অন্য কোন অঞ্চলের কারা-কারা জড়িত সে ব্যাপারে প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের নাম-ঠিকানা উদঘাটনে পুলিশি তৎপরা অব্যহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, বিকাশে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এ প্রতারক চক্রটি দীর্ঘ দিন যাবত গ্রাহকের লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে এ প্রতারক চক্রের আটক অন্যতম ৩ সদস্য আদালতে তাদের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানান তিনি ।

Discussion about this post