কুষ্টিয়া, ২মে, ২০২২॥ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্তানগর গ্রামে পূর্ব থেকে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবদমান দ্বন্দের জেরে আ’লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৪জন নিহত ও ১০জন আহত হয়েছেন। সোমবার বিকেল ৫টায় সংঘটিত এই সংঘর্ষের সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেছে। ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান রতন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- স্থানীয় আস্তানগর গ্রামের মৃ: আজিজুল হকের ছেলে মতিয়ার রহমান (৪৫), দাউদ মন্ডলের ছেলে লাল্টু মন্ডল(৪২), মৃত: হোসেন মন্ডলের ছেলে আবুল কাশেম (৬৫) এবং মৃত: আবুল মালিথার ছেলে আব্দুর রহিম মালিথা (৭০)। প্রথম তিনজন বর্তমান ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসানের সমর্থক এবং আব্দুর রহিম মালিথা প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি কেরামত আলীর সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আস্তানগর বাজারে কেরামত আলীর সমর্থক আব্দুর রহিম মালিথার সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মেহেদী হাসানের সমর্থকরা রহিমের উপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এসময় লঠির আঘাতে রহিম মাটিতে পড়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে মেহেদী সমর্থকরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
রহিমকে মারধরের সংবাদ পেয়ে কেরামত আলীর সমর্থকরা মেহেদী সমর্থকদের উপর হামলা করলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মেহিদীর সমর্থকরা পালিয়ে যায়। এই সুযোগে কেরামত আলী সমর্থকরা মেহেদী সমর্থক মতিয়ার, লাল্টু ও আবুল কাশেমের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
সংবাদ পেয়ে ইবি থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তৃব্যরত চিকিৎসক ৪জনকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। এছাড়া হাসপাতালে ভার্তি আহত ১০জনের মধ্যে আরও দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ২৫০শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: আশরাফুল আলম।
ইবি থানার পুলিশ পরির্দশক মোস্তাফিজুর রহমান রতন জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও জমিজমা সংক্রান্ত দ্বন্দের জেরে কেরামত আলী সমর্থক ও মেহেদী হাসান সমর্থকদের মধ্যে পূর্ব থেকেই উত্তেজনা চলছিল। সোমবার বিকেলে দ্ইু পক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এঘটনায় যারাই জড়িত থাক তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় এখনও কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে সংঘর্ষের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসানকে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
এছাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত আলী মোবাইল কলের মাধ্যমে জানান, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত: তার লোকজনদের লেলিয়ে দিয়ে আমার বডিগার্ড রফিকুলের পিতা রহিম মালিথাকে হত্যা করেছে।
এবি//দৈনিক দেশতথ্য//মে ২,২০২২//

Discussion about this post