জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেই সম্ভাব্য দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা শুরু করেছেন জোর লবিং। প্রচার প্রচারনা বাদ দিয়ে প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে দৌঁড়ে রয়েছেন ঢাকায়।
আগামী ১৫ জুন এই ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারও বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয় কোন প্রার্থী না থাকায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে মনোনয়ন নিচ্ছেন একাধিক প্রার্থী।
শোনা যাচ্ছে বিএনপি অধ্যুষিত দুর্ভেদ্য এ ঘাঁটিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিই এগিয়ে থাকবেন। কেননা, অতীতের নির্বাচন থেকে স্থানীয় ভোটাররা ধারণা পোষণ করছে নৌকা প্রতীক মানেই অর্ধেক বিজয়। অতীতে ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্র দখল-বেদখল ও নানা বিতর্কিত ঘটনায় সাধারণ মানুষ এখন ভোট কেন্দ্রে যেতে অনিহা। তাঁরা ভাবছেন এটাই হবে। এখানে যিনি নৌকা মনোনয়ন পাবেন তিনিই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচন বিশ্লেষকেরা বলেছেন ভিন্ন কথা, তাঁরা বলেছেন পূর্বের প্রেক্ষাপট আর বর্তমান সময় অনেক বদলে গেছে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বাড়ি আবার চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ। ইসির দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই কমিশনের প্রথম নির্বাচন। সহসাই বলা যায়, চট্টগ্রামের নির্বাচনের দিকে থাকবে তাঁদের বাড়তি নজর। ইভিএম সিস্টেমে ভোট গ্রহণ হবে। চাইবে না কখনো প্রথমেই প্রশ্নবিদ্ধ হোক। যদিও এর অনেকটা নির্ভর করে প্রশাসনের সঠিক দায়িত্ব পালনের উপর।
সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এখন আলোচনায় রয়েছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম আহমেদ, কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সেলিম হক, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য হাজী ছাবের আহমদ ও স্বতন্ত্র হিসেবে বিএনপি নেতা আলহাজ্ব মঈন উদ্দিন সহ একাধিক নেতার নাম।
এদিকে সর্বত্রই গুঞ্জন রয়েছে নৌকা পাচ্ছেন যুবলীগ নেতা মুহাম্মদ সেলিম হক। মাঠে, ঘাটে ও চায়ের দোকানসহ সর্বত্রই আলোচনার তুঙ্গে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ একটি নামই কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত দলের জন্য নিবেদিত ও ত্যাগী কোন নেতার ভাগ্যে জুঁটবে দলীয় মনোনয়ন। ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে নৌকা পেয়েছিলেন হাজী ছাবের আহমদ। কিভাবে পেয়েছিলেন সেটাও অনেকের কাছে অজানা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আবার মনে করছেন, স্থানীয় নির্বাচনটি দলীয় না রেখে উন্মুক্ত করে দেওয়ার। তখন ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই আর সব দলের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকত। এখন অনেকটা নিজ দলের নেতাকর্মীরাও বেকায়দায় পড়েছেন। কেননা স্থানীয় নির্বাচনে আঞ্চলিকতা ও নাড়ির টান প্রাধান্য পায়। এখানে দলের চেয়ে রক্তের সম্পর্ক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
ওদিকে, আগামীকাল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড এর বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। যেখান থেকে নিশ্চিত হবে হয়তো কোন ইউনিয়নে কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নৌকা প্রতীক। একটি বিশেষ সূত্র জানায়, সব প্রার্থীর জীবন বৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড যাচাই-বাছাই ও বিচার বিশ্লেষণ করবেন। তারপর মনোনয়ন বোর্ডই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তাই আগাম কেউ বলতে পারছেন না। কে পাবেন নৌকা।
ওদিকে, হাজী ছাবের আহমদ ও মুহাম্মদ সেলিম হকের মুঠোফোনে কয়েকবারের চেষ্টায় যোগাযোগ করা হলে তাঁরা দুই প্রার্থীই জানান, ‘এই মুহুর্তে ঢাকায় রয়েছেন। খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাই কথা বলতে পারছেন না। পরে সময় করে সুখবর জানাবেন বলে ফোন লাইন কেটে দেন।’
দৈনিক দেশতথ্য//এল//

Discussion about this post